ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ বন্যার্তদের, হাতে হাত মিলিয়ে পুনর্বাসনে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস বিমান বাহিনী প্রধানের
প্রকাশিতঃ 8:31 pm | August 31, 2024
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
সর্বনাশা বানের পানি নামছে ধীরগতিতে। পানি সরতেই ফেনীর জনপদে ভেসে উঠছে ধ্বংসযজ্ঞ। বেরিয়ে এসেছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। গোলাভরা ধান থেকে শুরু করে মাছ, হাঁস-মুরগি সবকিছুই ভেসে গেছে বানের জলে। সব হারিয়ে নি:স্ব দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা। বিধ্বস্ত ঘরে কেউ কেউ ওঠছেন আতঙ্ক নিয়েই। কান পাতলেই ত্রাণের জন্য হাহাকার। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ।
বন্যাকবলিত ফেনীর মানুষের সামনে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর কঠিন এক চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে বানভাসিদের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে লড়াইয়ের শক্তি জুগিয়েছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন। দুর্গত এলাকার মানুষ খাদ্য সঙ্কটে ভুগবে না বলেও নিশ্চিত করেছেন। দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধে বন্দোবস্ত করা হচ্ছে খাদ্য, বস্ত্র ও শিশু খাদ্যের পাশাপাশি স্যানিটেশনের।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার দুর্গাপুর সিংহনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজ বাহিনীর মেডিকেল ক্যাম্প পরিদর্শন করে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে এসব তৎপরতার কথা তুলে ধরেন বিমান বাহিনী প্রধান। তিনি বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি পুরো কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
জানা যায়, দুর্গত ওই এলাকায় বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত নানা রোগ। সাপের ছোবলেও ক্ষতবিক্ষত বহু মানুষ। এখানে নেই তেমন চিকিৎসা। ফেনীতে পানিতে এতোদিন নিমজ্জিত হাসপাতালগুলো সচল করার চেষ্টা চলছে। ওষুধ আর চিকিৎসা না পেয়ে কাতরাচ্ছেন অনেক অসুস্থ রোগী। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী, শিশু ও বয়স্করা। তবে এক্ষেত্রে আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে বিমান বাহিনীর মেডিকেল ক্যাম্প।
গত শুক্রবার (৩০ আগস্ট) থেকে উপজেলার ছাগলনাইয়ার ১০ নম্বর গোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুরে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে এই মেডিকেল ক্যাম্পের কার্যক্রম শুরু করে বিমান বাহিনী। এই মেডিকেল ক্যাম্প থেকে মিলছে বিভিন্ন প্রকারের ওষুধও। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন বলেন, এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ঘরবাড়ি মেরামতে সরকারের পাশাপাশি বিমানবাহিনীও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।’
আশপাশের তিন ইউনিয়নে ত্রাণ বিতরণ করার কথা জানিয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান বলেন, ‘যতদিন প্রয়োজন আমরা ত্রাণ বিতরণ করবো। পরে আমরা ইনশাআল্লাহ আমরা পুনর্বাসনে নজর দেওয়ার চেষ্টা করবো। সরকারের পাশাপাশি আমরা এক সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে যার যতটুকু সামর্থ্য অনুযায়ী রিহ্যাবিলিটেশন করার চেষ্টা করবো।’
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বন্যাদুর্গত এলাকায় অব্যাহতভাবে মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনার পাশাপাশি ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রেখেছে। এছাড়া রাজধানীর বিএএফ শাহীন কলেজ এর শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ত্রাণ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশারের এয়ার অধিনায়ক এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কালের আলো/এমএএএমকে