শাহজালাল বিমানবন্দরে সেবায় সন্তুষ্ট যাত্রীরা
প্রকাশিতঃ 5:13 pm | September 14, 2024
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসেছেন গাজীপুরের সাইফুল আলম। তিনিও বিমানবন্দরের নাগরিক সেবায় সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে বলেন, ‘দেশে ফিরে অনেক প্রবাসীর কাছে সিম থাকে না। পরিবারের কেউ বিমানবন্দরে এলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বা খুঁজে বের করতে কষ্ট হতো। এখন দেখলাম, বিমানবন্দরের ভেতরে যাত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা স্থানে টেলিফোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ টেলিফোন ব্যবহার না জানলে সংশ্লিষ্টরা সহযোগিতা করছেন। এছাড়া ফ্রি ওয়াইফাই আছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এমন আন্তরিকতা আগে দেখেনি কেউ।’
ইমিগ্রেশন পুলিশের যেসব সদস্য আগে গোমড়া মুখ করে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতেন, এখন তাদের ব্যবহার খুবই আন্তরিক’ হাসিমুখেই বলেন সৌদি প্রবাসী আক্তার হোসেন।
শুধু আক্তার বা সাইফুল নন একবাক্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রায় সব যাত্রীরাই সেবায় সন্তুষ্ট। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিমানবন্দরটিতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) উচ্চ পর্যায়ে ব্যাপক রদবদল হয়। বেবিচক চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া। এরপর থেকেই বিমানবন্দরে যাত্রীসেবার মান উন্নত হতে থাকে। তাঁর নানামুখী প্রয়াসে ভেতরে-বাইরে পরিবর্তনের হাওয়ায় উচ্ছ্বসিত রেমিট্যান্স যোদ্ধারা।
জানা যায়, বিমানবন্দরে যাত্রীসেবায় যে পরিবর্তন আনতে নিয়মিতই বিমানবন্দর ঝটিকা পরির্দশনে বের হন বর্তমান বেবিচক চেয়ারম্যান। এ প্রসঙ্গে মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলি, যাতে তারা যাত্রীদের পর্যাপ্ত সেবা দেন। এছাড়া সবাইকে বলেছি, যাতে তারা যাত্রীদের তথা প্রবাসীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন। একদিন আমি পরিচয় গোপন রেখে যাত্রীদের সঙ্গে ইমিগ্রেশন, লাগেজ সংগ্রহ, চেকিং কার্যক্রম পরির্দশন করেছি। দেখেছি, বিমানবন্দরের সেবায় প্রায় সব যাত্রী সন্তুষ্ট।’
তিনি বলেন, ‘এখন শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে বিশ্বমানের সেবা পাবেন যাত্রীরা।’
শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কল সেন্টার উদ্বোধন করা হয়। এখন দেশের যে কেউ কল সেন্টারে (০৯৬১৪-০১৩৬০০) যোগাযোগ করে সেবা নিতে পারছেন। এছাড়া যাত্রীসেবা বাড়াতে একই দিন একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ কল সেন্টারে বিমানবন্দর-সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য জানা যায়। আর পোর্টালে কাস্টমস ডিউটি অফিসারদের নামের তালিকা, ইমিগ্রেশন পুলিশের সেবা, নিরাপত্তা সেবা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার তথ্য, হুইলচেয়ার সেবা, ব্যাংকিং ও মানি এক্সচেঞ্জ সেবা, জরুরি প্রয়োজনে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত সব কর্মকর্তার ফোন নম্বর, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেবা, কোন উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থার কোন উড়োজাহাজ কখন ছেড়ে যাবে, কখন এসে পৌঁছাবে তা ঘরে বসেই জানতে পারছেন যাত্রীরা। তবে গত আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে এসব সেবার প্রচার বেড়েছে। আর বিমানবন্দরে কর্মরত সবার ব্যবহারেও পরিবর্তন ঘটেছে।
কালের আলো/বিএস/এমএম