ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ সেনাপ্রধানের, জানালেন সদা তৎপর থাকার কথা
প্রকাশিতঃ 8:12 pm | October 05, 2024
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
আর মাত্র চারদিন বাদেই শুরু হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। চণ্ডীপাঠ, ঢাকের বোল, শঙ্খের শব্দ আর উলুধ্বনিতে এবার আমন্ত্রিত হবেন দেবী দুর্গা। আগামী বুধবার (৯ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ শারদীয় উৎসব। এখনও মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে পুরোমাত্রায় প্রস্তুতি। পূজা উপলক্ষে শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে জাতীয় মন্দির রাজধানীর ঢাকেশ্বরীতেও। পূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে শনিবার (০৫ অক্টোবর) রাজধানীর সবচেয়ে প্রাচীন এই মন্দির পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
তিনি শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কোনও ধরনের শঙ্কা ছাড়াই পূজামণ্ডপে এসে ভক্তরা যেন ভক্তি জ্ঞাপন করতে পারেন; পূজার শুরু থেকে বিজয়া দশমীর আগ পর্যন্ত ও সবশেষ বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনের সময় পর্যন্ত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেশব্যাপী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদারের কথা জানিয়েছেন। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’
জানা যায়, চুন-বালির গাঁথুনিতে নির্মিত ঢাকেশ্বরী মন্দিরটি ঢাকার জাতীয় মন্দির হিসেবে পরিচিতি। প্রতি বছর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে উৎসবের আবহে ধুমধামের সঙ্গে দুর্গাপূজা হয়। এ সময় এখানে ভক্তদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। মন্দিরের পুরনো শিল্পশৈলীও দেখেও মুগ্ধ হন আগন্তুকরা। অতীতের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও শারদীয় দূর্গোৎসব যেন নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করা সম্ভব হয় সেজন্য শুরু থেকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় বলয় গড়ে তুলেছে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রতিনিয়ত সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান নিজেও।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সেনাপ্রধান বলেন, ‘এ দেশে সবার সম অধিকার রয়েছে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। এরজন্য যা যা দরকার, করা হবে।’
নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে জানিয়ে ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আমরা মাঠে আছি। আপনারা নির্ভয়ে পূজামণ্ডপে যাবেন। আমরা একটা সুন্দর পরিবেশ চাই, যেখানে আপনারা সবাই পূজা উদযাপন করতে পারবেন।’
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অবলোকনের পাশাপাশি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এর সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী জেলায় জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন থেকে পূজামন্ডপসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সদা তৎপর রয়েছে।’ হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রত্যেক বাংলাদেশী অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন সেনাপ্রধান। তিনি অন্য সকল ধর্মাবলম্বীদের সহযোগিতা ও সম্প্রীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান।
কালের আলো/এমএএএমকে