দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
প্রকাশিতঃ 7:33 pm | October 08, 2024
কালের আলো ডেস্ক:
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সঙ্গে মিশে আছে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি উল্লেখ করে বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সারাদেশে যথাযথ উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদির মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা উদ্যাপন আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি অনন্য উদাহরণ।
তিনি বলেন, ‘এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায় আবহমানকাল ধরে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নানান আয়োজনের মাধ্যমে দুর্গাপূজা উদ্যাপন করে আসছে। দুর্গাপূজা ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি সামাজিক উৎসবও। দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে সমাজের সকল স্তরের মানুষ একত্র হন, মিলিত হন আনন্দ-উৎসবে। সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ এ উৎসবকে সার্বজনীন রূপ দিয়েছে। ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি দুর্গাপূজা দেশের জনগণের মাঝে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব সত্য-সুন্দরের আলোকে ভাস্বর হয়ে উঠুক; ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরও সুসংহত হোক- এ কামনা করি।
মো. সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার পাশাপাশি আমাদেরকে মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় জান-মাল, অবকাঠামো, কৃষি ও প্রাণিসম্পদসহ সার্বিক জীবনযাত্রা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বানভাসী মানুষের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ মানবকল্যাণের জয়গানকে তুলে ধরেছে। জীবনধারণের জন্য নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য, ওষুধ ও নিরাপদ পানির পাশাপাশি বন্যার্তদের পুনর্বাসন ও দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য। সম্মিলিতভাবে এ ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিতে আমাদের আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে। আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে ঋদ্ধ অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি একটি সুন্দর আগামী ও আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে কার্যকর অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। বিশ্বে মানুষ ও মানবতার জয় হোক- এ প্রত্যাশা করি।
রাষ্ট্রপতি শারদীয় দুর্গোৎসবের সাফল্য কামনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
অন্যদিকে, অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, “হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে আমি দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকল নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশ আমাদের সকলের। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এদেশ সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের ভাগ্য উন্নয়ন এবং সমান অধিকার সুনিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সকল নাগরিকের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
কালের আলো/এমএএইচ/ইউএইচ