আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অর্ডন্যান্স কোরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার বার্তা সেনাপ্রধানের 

প্রকাশিতঃ 9:11 pm | November 07, 2024

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অর্ডন্যান্স কোরের। বিশেষ করে উপসাগরীয় যুদ্ধের পর বিধ্বস্ত কুয়েতের নিরাপত্তায় মাইন, ঝুঁকিপূর্ণ গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক অপসারণে অসামান্য সাহস ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে এই  কোরের সদস্যরা। বিশ্ব পরিমণ্ডলে জানান দেয় নিজেদের সক্ষমতার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আর্মি অর্ডন্যান্স কোর এর ৪৪তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনেও কোরটির সদস্যদের পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। তিনি অর্জিত গৌরব ও সুনাম সমুন্নত রেখে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন তাদের আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণে।

বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) গাজীপুরস্থ রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসের অর্ডন্যান্স সেন্টার এন্ড স্কুল এর অর্ডন্যান্স হলে অনুষ্ঠিত বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে অন্তরমথিত ভালোবাসায় কালের বিবর্তনে পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতার নিরবচ্ছিন্ন চর্চার আলোকেই সুমিত ভাষায় জ্ঞানোদ্দীপক এমন দিকনির্দেশনাই প্রদান করেন সেনাপ্রধান।

জানা যায়, স্বাধীনতার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা সামরিক সরঞ্জাম দ্রুত সংগঠিত করে অর্ডন্যান্স কোরের আওতাভুক্ত করা হয়। অসংখ্য মাইন ও নিমজ্জিত জাহাজ অপসারণ করে চট্টগ্রাম বন্দরকে সচল করে আর্মি অর্ডন্যান্স কোরের সদস্যরা। বাংলাদেশ অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি ও বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই কোরের সদস্যদের অবদানও অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পরিপূর্ণরূপে সমরসজ্জিত করার গুরু দায়িত্ব অর্ডন্যান্স কোরের ওপর ন্যস্ত। তাঁরা সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ এবং বাংলাদেশ আনসারের বিবিধ প্রয়োজনীয় দ্রব্য, বিশেষ করে গোলাবারুদের চাহিদা মিটিয়ে থাকে।

এছাড়া অর্ডন্যান্স সেন্টার অ্যান্ড স্কুলকে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে রূপ দিতে সেনা সদর গ্রহণ করেছে নানামুখী পদক্ষেপ। ফলশ্রুতিতে দেশ ও বিদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা এখান থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। কঠোর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন অসামরিক যুবককে একজন সৈনিক হিসেবে গড়ে তুলতে এই প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভূমিকা প্রশংসনীয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই প্রশিক্ষণকেন্দ্র বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও প্রতিবছর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন।

আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এবারের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান উপস্থিত অর্ডন্যান্স কোরের অধিনায়ক ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। তিনি এই কোরের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, গবেষণা, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী অর্ডন্যান্স কোরের বীর সেনানীসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। সেনাবাহিনী প্রধান অর্ডন্যান্স কোরের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য এবং দেশমাতৃকার সেবায় এই কোরের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অর্ডন্যান্স কোরের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং কোরের প্রতিটি সদস্যকে অভিনন্দন জানান।

কালের আলো/এমএএএমকে