সরকার তিন মাসে যথেষ্ট অর্জন করেছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

প্রকাশিতঃ 12:12 am | November 08, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

অন্তবর্তীকালীন সরকারের তিন মাসের অর্জনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, তিন মাসে এই সরকার যথেষ্ঠ অর্জন করেছে। তারা সিনসিয়ার ছিল, কোনও কেলেঙ্কারির কথা শুনেছেন? তিনি বলেন, আমরা বলতে পারি, মোটা দাগে ৫টা মেজর কাজ হয়েছে। এক. স্মুথ একটা ট্রানজেশন হয়েছে। দুই. একটা ভঙ্গুর অবস্থা থেকে ইকোনমিক রিকভারি হয়েছে। তিন. ম্যাচিভ গ্লোবাল সাপোর্ট পেয়েছি আমরা। চার. রিফর্ম এবং ইলেকশনের একটা রোডম্যাপ দেওয়া হয়েছে। রিফর্মের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ করে রিফর্ম কতটুকু করা হবে এবং সে অনুযায়ী ইলেকশনের ডেট ঠিক হবে। পাঁচ. জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, বন্যা, গার্মেন্টসে অশান্তিসহ অনেকগুলো ক্রাইসিস ছিল, এই ক্রাউসিসগুলো থেকে উত্তরণে, কতটা ভালোভাবে মোকাবিলা করা যায়— সেই চেষ্টা করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে মানুষের মধ্যে অনেক আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, অনেকে ঢাকায় এসে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছেন। আমরা চেষ্টা করেছি, সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে যেটা সবচেয়ে বেশি ভালনারেবল সেটা ডেলিভার করার চেষ্টা করেছি। আমরা তাদের বলেছি, অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হলে আরও ভালো সমাধান দেওয়া যাবে।

কিছু ব্যাংকে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে সরকার কী ভাবছে— এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বিগত সরকার ব্যাংকগুলোকে যে ভঙ্গুর অবস্থায় রেখে গিয়েছিল, তার চেয়ে বর্তমান অবস্থা অনেক অনেক ভালো। তারপরও কিছু কিছু ব্যাংক অপরিপক্ক বা রাজনৈতিক প্রভাবে ঋণ দেওয়ার কারণে তারা রুগ্ন হয়ে গেছে। আমরা বেসরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে অনেক সময় কিছুই করতে পারি না, এতে মোরাল হ্যাজার্ড তৈরি হয়। তবে আমার মনে হয়, ব্যাংকের স্বাস্থ্যের অবস্থা এ মুহূর্তে অনেক অনেক ভালো।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতিকে লক্ষ্য করে আমরা সুদ বাড়িয়েছি। কী কারণে করছে সেটা কেন্দ্রীক ব্যাংক জানিয়েছে। সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি ডাবল ডিজিট থেকে সিংগেল ডিজিটে নেমেছিল। এখন আবার বেড়েছে। আমরা আশা করছি, সরকারের পদক্ষেপগুলো ঠিক মতো প্রয়োগ করতে পারলে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। মূল্যকে সহনীয় করতে আমরা ওয়াদাবদ্ধ এবং জিনিসপত্রের দাম মানুষের সহনীয় পর্যায়ে রাখা।

আজারবাইজানের বাকুতে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী নিয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম কলেন, যতজন না নিলেই না, ততজনকেই নেওয়া হবে। এটি মনে হয়, নিউ ইয়র্ক সফরের চেয়েও কম হবে। আগের পতিত স্বৈরাচার ২৫০ জনের বেশি লোক নিয়ে বড় রকমের সফর করতেন। একটা সফরে যে লোকদের থাকতে হয়, ততগুলো লোককেই নেওয়া হবে এই সফরে। এটা আপনারা যাচাই করে দেখবেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি স্যাক করা নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিটিভি কর্তৃপক্ষই বলতে পারবে, কেন তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি তাদের বিষয়।

কিছু সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, এটা তথ্য মন্ত্রণালয় করেছে। তাদের ব্যাপারে অবশ্যই কিছু সুনির্দিষ্ট কারণ ছিল, তার ভিত্তিতে তারা এটা করেছে। গত ১৫ বছরে আমরা অনেক সাংবাদিকের রোল দেখেছি। তারা স্বৈারাচারের কণ্ঠস্বর ছিলেন, তারা আরেকজনের ভয়েস কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে গ্রাউন্ড তৈরি করেছেন। সংবাদপত্র বা টেলিভিশনের স্বাধীনতা খর্ব করার মতো কোনও কাজ সরকার করছে না। আমাদের বিরুদ্ধে অনেক নিউজ হয়েছে। কিন্তু আমরা তা নিয়ে একটা কথাও বলিনি। বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকুক।

কালের আলো/এমএএইচ/ইউএইচ