১৭২ কিলোমিটার রেলপথেই হুইসেল বাজিয়ে ছুটবে ট্রেন

প্রকাশিতঃ 9:45 am | November 09, 2024

মো.শামসুল আলম খান, কালের আলো:

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প পূর্ণাঙ্গরূপে চালু হচ্ছে এই নভেম্বরে। ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের’ পুরো ১৭২ কিলোমিটার রেলপথেই হুইসেল বাজিয়ে ছুটবে ট্রেন। ফলে চলতি মাস থেকেই ট্রেনগুলো ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু-ভাঙ্গা-মধুমতী সেতু-যশোর হয়ে নতুন রেলপথে খুলনায় যাবে। এতে ঢাকা থেকে রেলপথে খুলনার দূরত্ব কমবে ১৭৫ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে মাত্র চার ঘণ্টায় যাওয়া যাবে খুলনা ও বেনাপোলে, যশোরে যেতে লাগবে সাড়ে তিন ঘণ্টা।

৪০ হাজার কোটি টাকার এই মেগা প্রকল্প

  • পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প পূর্ণাঙ্গরূপে চালু হচ্ছে এই নভেম্বরে
  • ঢাকা থেকে মাত্র চার ঘণ্টায় যাওয়া যাবে খুলনা ও বেনাপোলে
  • চলতি বছরেই নতুন আট জোড়া ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা

জানা যায়, প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার এই মেগা প্রকল্পের রেলপথ দিয়ে বর্তমানে খুলনা, যশোরের বেনাপোল ও রাজশাহীতে মাত্র চারটি ট্রেন চলছে। ঢাকা থেকে রেলপথে পদ্মা সেতু হয়ে খুলনার দূরত্ব প্রায় ৪১২ কিলোমিটার। ট্রেনগুলো বর্তমানে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুর-কুষ্টিয়া-দর্শনা হয়ে খুলনায় যায়। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প পুরো চালু হলে এই পথের দূরত্ব কমে হবে মাত্র ২৩৭ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে বেনাপোলের বর্তমান দূরত্ব ৩৫৬ কিলোমিটার। নতুন রেলপথে এর দূরত্ব কমবে ১৮৪ কিলোমিটার।

ঢাকা-খুলনা রেলপথের দূরত্ব কমবে। এতে শুধু যাত্রীরা লাভবান হবেন তা নয়, রেলওয়েও লাভবান হবে।

সরদার সাহাদাত আলী
মহাপরিচালক, বাংলাদেশ রেলওয়ে

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের’ পূর্ণাঙ্গ রেলপথে আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে ট্রেন চালাতে চায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। যদিও প্রকল্পটিতে লুপ লাইন ও সাইড লাইন রয়েছে ৪৩ দশমিক ২ কিলোমিটার। ফলে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য ২১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার। ট্রেনগুলো ‘প্রভাতি’ ও ‘গোধূলী’ নাম দিয়ে চালানো হতে পারে। এই পরিকল্পনার মধ্যে আছে খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটের সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস, ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস।

সূত্র মতে, এই প্রকল্পের রেলপথটি ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার গতির ব্রডগেজ লাইন। যদিও ঢাকা থেকে পদ্মবিলা জংশন রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত যাওয়ার পর প্রকল্পের একটি শাখা লাইন যশোরের রূপদিয়া এবং অন্য একটি শাখা লাইন খুলনার সিঙ্গিয়া স্টেশনে যুক্ত করা হয়েছে। ফলে খুলনার ট্রেনগুলো পদ্মবিলা থেকে সিঙ্গিয়া হয়ে খুলনা স্টেশনে যাবে। যদিও পদ্মবিলা থেকে রূপদিয়া হয়ে যশোরের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার।

পুরো প্রকল্প উদ্বোধনের বিষয়ে জানতে চাইলে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘পুরো প্রকল্পে ভাঙ্গা স্টেশনে সিগনালিংয়ের কাজ এখনও চলছে। এটি এই সপ্তাহেই শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই মাসেই। আমরা আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে একটি তারিখ নির্ধারণ করেছি।’

সূত্র জানায়, বর্তমানে পদ্মা সেতু দিয়ে তিনটি আন্তনগর ট্রেনÑখুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোলগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ও রাজশাহীগামী মধুমতী এক্সপ্রেস এবং খুলনাগামী কমিউটার ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস চলাচল করছে। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে না রেলওয়ে। তাই পদ্মা সেতু দিয়ে চার রুটে চলতি বছরেই নতুন আট জোড়া ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে: ঢাকা-যশোর-খুলনা, ঢাকা-যশোর-বেনাপোল, ঢাকা-ভাঙ্গা-গোপালগঞ্জ এবং ঢাকা-ফরিদপুর-দর্শনা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘এই নভেম্বরেই পদ্মা রেল সেতু সংযোগ প্রকল্প পুরোপুরি চালু হচ্ছে। ফলে ঢাকা-খুলনা রেলপথের দূরত্ব কমবে। এতে শুধু যাত্রীরা লাভবান হবেন তা নয়, রেলওয়েও লাভবান হবে। যাত্রার সময় কমে গেলে এই রেলপথের ট্রেনগুলোকে আমরা দিনে দু’বার করেও পরিচালনা করতে পারব। বিষয়টি এখনও পরিকল্পনায় রয়েছে।’ তবে উদ্বোধনে অতিথি কে থাকবেন এই বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত করেনি রেল কর্তৃপক্ষ।

কালের আলো/এমএসএকে/এমএএএমকে