ডিপ ফ্রিজে মরদেহ: ছেলেকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় র্যাবের গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা
প্রকাশিতঃ 4:29 pm | November 16, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গৃহবধূকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনায় ছেলেকে গ্রেপ্তার ও তদন্তের বিষয়ে র্যাবের কোনো সদস্যের গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
গত ১০ নভেম্বর বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় বাসার ডিপ ফ্রিজ থেকে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই ঘটনায় নিহত গৃহবধূর ছোট ছেলেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
তখন র্যাব জানিয়েছিল, হাতখরচের টাকার জন্য মাকে হত্যা করে ছেলে। তবে পুলিশের তদন্তে ওই ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে।
পুলিশ বলেছে, ছেলে নয়, বাড়ির ভাড়াটিয়াই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে র্যাবের বক্তব্য জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস বলেন, বগুড়ার ধুপচাঁচিয়ার ঘটনায় ছেলে জবানবন্দি দিয়েছেন। সে তথ্য আমরা রেকর্ড করেছি। তাকে যখন ক্যাম্পে আনা হয় তখনও তার আত্মীয়-স্বজনরা ছিলেন। ছেলের দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতেই র্যাব কাজ করেছে। তদন্তে ভিন্নতা হতেই পারে। ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও তদন্ত করছে। পুলিশের তদন্তে যদি র্যাবের সহযোগিতা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে, আমরা করব।
ঘটনার তদন্তে র্যাবের কারো গাফিলতি আছে কি না বা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের র্যাবের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ আসে বা তদন্তে গাফিলতির তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
দুই সংস্থার তদন্তে ভিন্নতা কেন? নিহত গৃহবধূর ছেলে তো আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেননি। আদালতে অস্বীকার করায় রিমান্ডে নিতে হয়েছে। এখনো রহস্যই উদঘাটিত হলো না, কিন্তু ছেলে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে লে. ক. মুনিম ফেরদৌস বলেন, স্বীকারোক্তি অনেক ধরনের আছে। কেউ কোনো ঘটনায় স্বীকারোক্তি দেওয়া মানেই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে না। আবার যিনি স্বীকারোক্তি দেবেন তিনি যেকোনো সময় তার বক্তব্য অস্বীকার, পরিবর্তন, পরিমার্জন করতে পারবেন। এটা তার আইনগত অধিকার। ১৬৪, ১৬১ আলাদা। এখানে র্যাবের অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। তবুও ঘটনায় তদন্তে গাফিলতি তদন্ত করে দেখা হবে।
তিনি আরও বলেন, মিডিয়া ব্রিফিং সচেতনতামূলক কাজ। এখানে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। ব্রিফিং নিবারণমূলক কাজের অংশ, মানুষ যাতে শিক্ষা নেয় বা সচেতন হয়। এখানে পুলিশের তদন্ত ভুল সেটার সুযোগ নেই। ঘটনার আরও অধিকতর তদন্ত হবে। তদন্ত কিন্তু শেষ হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ১০ নভেম্বর দুপুরে দুপচাঁচিয়ার জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ নামে চারতলা বাড়ির তিনতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উম্মে সালমা নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি দুপচাঁচিয়া ডিএস ফাজিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী। এ ঘটনায় ওই দম্পতির ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তার আজিজুর ওই মাদ্রাসার আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
কালের আলো/এমএএইচইউ