৪৪০ নবীন নাবিক পেলো নৌবাহিনী; সততা, কর্মদক্ষতা ও নিয়মানুবর্তিতায় গুরুত্ব নৌবাহিনী প্রধানের
প্রকাশিতঃ 10:14 pm | December 01, 2024
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
দীর্ঘ ২২ সপ্তাহের কঠোর প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা এখন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গর্বিত নাবিক। প্রাণবন্ত কুচকাওয়াজে দৃঢ় কণ্ঠে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করার শপথ। বাদ্যের তালে তালে শনিবার (০১ ডিসেম্বর) পটুয়াখালীর বানৌজা শের-ই-বাংলা প্যারেড গ্রাউন্ডে বর্ণাঢ্য শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজে দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে চলে ৪৪০ জন নবীন নাবিক। মনোজ্ঞ এই কুচকাওয়াজে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি নবীন নাবিকদের চরিত্রে দেশপ্রেম, আনুগত্য, শৃঙ্খলা, মূল্যবোধ, সাহসিকতা ও শিষ্টাচার দৃঢ়ভাবে ধারন করতে গুরুত্বারোপ করেন। স্মরণ করিয়ে দেন যেকোন পেশায় উন্নতি করতে হলে সততা, কর্মদক্ষতা ও নিয়মানুবর্তিতার কোন বিকল্প নেই। মহান সৃষ্টিকর্তার ওপর অবিচল বিশ্বাস স্থাপন করে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। নির্দেশনা দেন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা সর্বদা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকার।
নবীন নাবিকদের এমন অর্জনে উচ্ছ্বসিত তাদের অভিভাবকরাও। নিজ নিজ সন্তানরা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে এই প্রত্যাশা তাদের। নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী নবীন নাবিকদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। তিনি দেশের সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণ ও বহি:শত্রুর আক্রমণ থেকে সমুদ্রসীমা সুরক্ষার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন। দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, নবীন নাবিকরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্বে আত্মনিয়োগ করে বাংলাদেশ এবং প্রিয় নৌবাহিনীকে বিশ্ব দরবারে আরও গৌরবোজ্জ্বল আসনে অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে।
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বি/২০২৪ ব্যাচের ৪৪০ জন নবীন নাবিকের বুটক্যাম্প প্রশিক্ষণ বর্ণাঢ্য শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে এদিন শেষ হয়। নৌবাহিনীর বি/২০২৪ ব্যাচের নবীন নাবিকদের মধ্যে মো. এ কে এম শাহাদত হোসেন সাদী পেশাগত ও সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ ফল অর্জন করে সেরা চৌকস নাবিক হিসেবে ‘নৌপ্রধান পদক’ লাভ করেন। মো. শাহীনুর আলম শিমুল দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ‘কমখুল পদক’ এবং সাব্বির রহমান তৃতীয় স্থান অধিকার করে ‘শের-ই-বাংলা পদক’ অর্জন করেন।
- নবীন নাবিকদের নৌবাহিনী প্রধানের অভিনন্দন
- অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ-কমান্ডোদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ
- একটি আধুনিক, সক্ষম ও সমৃদ্ধশালী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে দেশে-বিদেশে সুখ্যাতি
নবীন নাবিকদের নৌবাহিনী প্রধানের অভিনন্দন, অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ-কমান্ডোদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বি/২০২৪ ব্যাচের নবীন নাবিকদের এই মনোরম ও বর্ণাঢ্য প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হতে পেরে নিজে অত্যন্ত আনন্দিত বলে জানান নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ২২ সপ্তাহ সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষ করে আজকের এই প্রাণবন্ত কুচকাওয়াজের মধ্যে দিয়ে নবীন নাবিকরা দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান ও পবিত্র পেশাগত জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। এজন্য আমি তাদের সকলকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।’
তিনি বলেন, ‘আজ এই বিশেষক্ষণে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ-কমান্ডোদের। যাদের সবোর্চ্চ ত্যাগ শিকারের মাধ্যমে আজ আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পেরেছি। একই সাথে স্মরণ করছি জাতির ক্রান্তিলগ্নে গত জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদদেরকে। আমি তাদের সকলের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। একই সঙ্গে আন্দোলনে আহত সকল ছাত্র-জনতার আশু রোগ মুক্তি প্রার্থনা করছি।’
একটি আধুনিক, সক্ষম ও সমৃদ্ধশালী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে দেশে-বিদেশে পরিচিতি
বাংলাদেশ নৌবাহিনী বর্তমানে একটি আধুনিক, সক্ষম ও সমৃদ্ধশালী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে দেশে-বিদেশে পরিচিতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে মন্তব্য করেন নৌবাহিনী প্রধান। তিনি ফিরে যান ৫৩ বছর আগের ইতিহাসের গোড়ার দিকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এক সঙ্কটময় মুহুর্তে কতিপয় বাঙালি নাবিক ও তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত হয় নৌ কমান্ডো দল। যারা অপারেশন জ্যাকপট পরিচালনা করে স্বাধীনতা যুদ্ধে বয়ে আনে অসামান্য সাফল্য। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিস্তৃত সমুদ্র অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব ও সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় দু’টি টহল জাহাজ ও সীমিত সংখ্যক নাবিক নিয়ে যাত্রা শুরু করে আমাদের প্রিয় নৌ বাহিনী। পরবর্তীতে বিভিন্ন পর্যায়ে সক্ষমতার বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী বর্তমানে একটি আধুনিক, সক্ষম ও সমৃদ্ধশালী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে দেশে-বিদেশে পরিচিতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।’
ইতিহাস পর্যালোচনা করে এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেন, ‘পৃথিবীর যেসব দেশ সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার করে উন্নতির চেষ্টা করেছে দ্রুত গতিতে তাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এ কারণেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রাধিকারের তালিকায় ব্লু ইকোনমি তথা সুনীল অর্থনীতি বিশেষভাবে স্থান করে নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণ ও বহি:শত্রুর আক্রমণ থেকে সমুদ্রসীমা সুরক্ষার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। নৌবহরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফটসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। ২০১৭ সালে দু’টি সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে আমাদের প্রাণপ্রিয় নৌবাহিনী একটি আধুনিক ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর সক্ষমতা অর্জনের অংশ হিসেবে নতুন ঘাঁটি, জাহাজ, আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সাবমেরিনের অপারেশনাল কর্মকাণ্ড ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কক্সবাজারের পেকুয়ায় সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মাণ করা হয়েছে। অপরদিকে, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে উপকূলবর্তী এলাকায় নৌবাহিনীর অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আপনারা যে ঘাঁটিতে অবস্থান করছেন বানৌজা শের-ই-বাংলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। নবনির্মিত এই ঘাঁটিসমূহ পায়রা ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরসহ উপকূলীয় এলাকায় নিয়োজিত বাণিজ্যিক জাহাজ, মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার ও ব্লু ইকোনমি সংশ্লিষ্ট সকল মেরিটাইম প্রতিষ্ঠানসমূহের নিরাপত্তা ও সমুদ্রসম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।’
- নৌবাহিনীর দক্ষ পরিচালনায় খুলনা শিপইয়ার্ড’র মিডিয়াম ও লার্জ পেট্রোল ক্রাফট নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন
- অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সার্বিক সহযোগিতা
- বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গর্বিত নাবিক হিসেবে দেশসেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখার আহ্বান
নৌবাহিনীর দক্ষ পরিচালনায় খুলনা শিপইয়ার্ড’র মিডিয়াম ও লার্জ পেট্রোল ক্রাফট নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন
নৌবাহিনীর দক্ষ পরিচালনায় খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড বর্তমানে মিডিয়াম ও লার্জ পেট্রোলক্রাফট নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে জানান নৌবাহিনী প্রধান। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত ৫টি পেট্রোল ক্রাফট ইতোমধ্যেই নৌবহরে সংযোজিত হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল (শনিবার) খুলনা নৌ ঘাঁটিতে এই পেট্রোল ক্রাফট স্কোয়াড্রনের পঞ্চম জাহাজ ‘বানৌজা বিশখালী’ কমিশন করা হয়েছে। এছাড়া নেভেল এভিয়েশনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সম্প্রতি আরও দু’টি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযুক্ত হয়েছে। নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আধুনিক নৌবাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দু’টি আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিকেল বা ইউএভি এবং দু’টি ইউটিলিটি হেলিকপ্টার বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হবে বলে আশা করা যায়।’
এডমিরাল এম নাজমুল হাসান আরও বলেন, ‘নৌবহরের জাহাজসমূহের অপারেশনাল রাখার জন্য বিশেষায়িত মেরামত সুবিধা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে মংলায় একটি পূর্ণাঙ্গ ডকইয়ার্ড স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম সংযোজনের দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রতিনিয়ত অবদান রেখে চলেছে। সমুদ্রসম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সিসমিক সার্ভে পরিচালনা, ফ্রডওয়েল স্থানান্তরে পাইপলাইন স্থাপন, কক্সবাজার জেলার মাতারবাড়িতে কয়লা ভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন, মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নিরাপত্তা ও জরুরি সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী অপারেশন ব্লু গার্ড পরিচালনা করছে। এছাড়া মৎস্য সম্পদের সুরক্ষায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড উপকূলবর্তী এলাকা ও গভীর সমুদ্রে নিয়মিত টহল পরিচালনা করে চলেছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সার্বিক সহযোগিতা
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সশস্ত্র বাহিনীর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে জানিয়ে নৌবাহিনী প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে সহায়তা করে চলেছে। এছাড়া নদীপথে ও সমুদ্রে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী জেলায় সাম্প্রতিককালের ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলায় ও বন্যা পরবর্তী চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে দু:স্থ পরিবারের মাঝে ঘর তৈরি করে হস্তান্তরসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। দেশের প্রয়োজনে সর্বদা নিবেদিত থেকে সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকার করার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্য সদা প্রস্তুত রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও প্রস্তুত থাকবে ইনশাআল্লাহ।’
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গর্বিত নাবিক হিসেবে দেশসেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখার আহ্বান
নবীন নাবিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যের শেষপ্রান্তে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেন, ‘আজকের এই প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তোমরা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গর্বিত নাবিক হতে চলেছো। তোমাদের সকলের প্রতি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তোমরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্বে আত্মনিয়োগ করে বাংলাদেশ এবং আমাদের প্রিয় নৌবাহিনীকে বিশ্ব দরবারে আরও গৌরবোজ্জ্বল আসনে অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে। তোমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ স্কুলে অর্জিত জ্ঞান প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে আমি আশাবাদী।’
তিনি বলেন, ‘তোমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের রয়েছে এক সুদীর্ঘ গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তোমাদেরকে কাজ করে যেতে হবে। মনে রাখবে যেকোন পেশায় উন্নতি করতে হলে সততা, কর্মদক্ষতা ও নিয়মানুবর্তিতার কোন বিকল্প নেই। আমি আশি করি প্রশিক্ষণ স্কুল থেকে তোমাদের অর্জিত শিক্ষাকে যথাযথভাবে ব্যবহার করে তোমরা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গর্বিত নাবিক হিসেবে দেশসেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখবে। নাবিক হিসেবে তোমাদের চরিত্রে দেশপ্রেম, আনুগত্য, শৃঙ্খলা, মূল্যবোধ, সাহসিকতা ও শিষ্টাচার দৃঢ়ভাবে ধারন করবে। মহান সৃষ্টিকর্তার ওপর অবিচল বিশ্বাস স্থাপন করে তোমরা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যাবে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা সর্বদা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবে- এ আমার দৃঢ় প্রত্যাশা।
কালের আলো/এমএএএমকে