তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি

প্রকাশিতঃ 7:13 pm | December 04, 2024

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:

দেশের ৪৮ শতাংশ তরুণ জনগণকে রক্ষা করতে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছে ঢাকা আহছানিয়া মিশন। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সভাপতি প্রফেসর ড. গোলাম রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিটি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

চিঠিতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো তুলে ধরা হয়। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রণীত খসড়ায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলো হলো—

সকল পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা ও ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা ইত্যাদি।

এ প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো দ্রুত পাস হলে, বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার, অর্থাৎ প্রতিদিন ৪৪২ জনের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ ২০০৩ সালে প্রথম দেশ হিসেবে তামাক নিয়ন্ত্রণের আন্তর্জাতিক চুক্তি ডব্লিওএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (WHO FCTC) স্বাক্ষর করে। ২০০৫ সালে এফসিটিসির বাধ্যবাধকতায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হয়। তবে বিশেষত ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং তামাকপণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বর্তমানে ‘খারাপ’ এবং ‘মধ্যম’ স্তরে রয়েছে।

এছাড়া, ঢাকা আহছানিয়া মিশন তামাক ব্যবসায়ীদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে আহ্বান জানিয়েছে। তামাক কোম্পানিগুলোর দাবি— সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হলে রাজস্ব কমে যাবে, তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুসারে এটি মিথ্যা। ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাসের পর তামাক থেকে রাজস্ব ছিল ২ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা, যা পরবর্তী বছর ৩ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা হয়। ২০১৩ সালে যখন আইনটি সংশোধন হয়, তখন তামাক থেকে রাজস্ব আয় দাঁড়ায় ১০ হাজার ১৭০ কোটি টাকা।

ঢাকা আহছানিয়া মিশনের দাবি— প্রস্তাবিত সংশোধনী পাস হলে তরুণদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে এবং নতুনদের ধূমপান থেকে বিরত রাখাও সহজ হবে। তাই তামাকমুক্ত সুস্থ জাতি গঠনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস করা প্রয়োজন।

কালের আলো/ডিএইচ/কেএ