মৎস্য চাষে বিনিয়োগে আগ্রহী ডাচ ব্যবসায়ীরা
প্রকাশিতঃ 5:36 pm | December 11, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বাংলাদেশে জলজ ও মৎস্য চাষের প্রতিযোগিতা ও স্থায়িত্ব বাড়াতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ডাচ সরকার এবং বেসরকারি অংশীদাররা।
‘ফুডটেকবাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় ২০২২ সাল থেকে ২০২৭ সাল নাগাদ ৬ মিলিয়ন ইউরোর সমপরিমাণ সহ-বিনিয়োগ করেছে তারা।
‘ফুডটেকবাংলাদেশ’ হলো একটি পাঁচ বছরব্যাপী (সেপ্টেম্বর ২০২২-আগস্ট ২০২৭) জলজ কৃষি ও মৎস্য উন্নয়নের ওপর সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের কর্মসূচি। যা বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থায়নে আন্তর্জাতিক কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠান লারিভ ইন্টারন্যাশনাল ও লাইটক্যাসল পার্টনারস-এর মাধ্যমে যৌথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার মাঝিয়ালীতে একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এতে সূচনা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারি সারা ভ্যান হোভে। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন।
এই কেন্দ্রের মাধ্যমে ময়মনসিংহের স্থানীয় ২০০ জনের অধিক মৎস্য চাষিকে মাছ চাষে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে দক্ষতা ও উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। নেদারল্যান্ডসের কৃষি প্রযুক্তির সহায়তায় এই বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মাছ চাষের আধুনিক পদ্ধতির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেন্টার অব এক্সিলেন্স (সিওই) এর মাধ্যমে। এই রকম একটি পদ্ধতি হচ্ছে: রিসার্কুলেটিং অ্যাকুয়াকালচার সিস্টেম; যা খামার পদ্ধতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। এতে চাষের সর্বোচ্চ আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে ছোট পুকুরে মাছ চাষের অনুশীলন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে এই সেন্টার অব এক্সিলেন্সে (সিওই) বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। এর মাধ্যমে দর্শকরা এই প্রযুক্তিগুলির সর্বোত্তম ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারি সারা ভ্যান হোভে বাংলাদেশি জলজ, কৃষি ও মৎস্য চাষের সম্ভাবনা এবং উচ্চ উৎপাদনশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এর পাশাপাশি তিনি খাদ্য নিরাপত্তায় পুষ্টি ও খাদ্যের মান বজায় রাখার স্বার্থে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উৎপাদন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহবান জানান।
ময়মনসিংহের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন বলেন, প্রযুক্তি ও জ্ঞান স্থানান্তর, বিশেষ করে নেদারল্যান্ডস থেকে প্রযুক্তি সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশের জলজ চাষ খাতকে বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ময়মনসিংহে সিওই প্রতিষ্ঠা একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে। এই কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা মৎস্য চাষে গুণগত বিচারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
অনুষ্ঠানে কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধিরা তাদের ভূমিকা ও কার্যক্রম বিষয়ক উপস্থাপনা তুলে ধরেন। কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিল: লাইটক্যাসল পার্টনারস, ফিশটেক লিমিটেড এবং ডি হিউস অ্যানিমাল নিউট্রিশন।
ফুডটেক বাংলাদেশ প্রকল্পের লক্ষ্য হলো, সেন্টার অফ এক্সিলেন্স (সিওই)-এ প্রদর্শনী ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা। দেশে এই ধরনের চারটি কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এই কেন্দ্রগুলির স্থানগুলো হলো: খুলনা, মংমনসিংহ, কক্সবাজার ও পটুয়াখালী। প্রতি কেন্দ্রে ২০০ জন করে মোট ৮০০ জন মৎস্য চাষিকে নেদারল্যান্ডসের আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে এই দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
কালের আলো/ডিএইচ/কেএ