১৩৫ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দিলো ঢাকা জেলা প্রশাসন
প্রকাশিতঃ 4:46 pm | December 16, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
মহান বিজয় দিবসে ১৩৫ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দিয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। প্রথমে ফুল দিয়ে আমন্ত্রণ এবং পরে প্রাইজ মানি তুলে দিয়ে তাদের সম্মানিত করা হয়েছে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ঢাকার জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমদ প্রধান অতিথি ও ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ বিশেষ অতিথি ছিলেন। এছাড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোছা. ফুয়ারা খাতুন স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শোয়েব শাত-ঈল ইভান ও নুসরাত নওশীনের সঞ্চালনায় স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন ও ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান এতে বক্তব্য রাখেন। এর আগে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বিজয় দিবসের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে বিজয় মেলার উদ্বোধন করা হয়। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমদ বলেন, অত্যাচারের মাত্রা যখন বাড়ে, তখন সে এটাকে নিজের সফলতা বলে মনে করে। একই সঙ্গে অত্যাচারের মাত্রা যখন বাড়ে, তখন মানুষের প্রতিরোধের আকাঙ্ক্ষাও বাড়ে। এখান থেকে জম্ম নেয় মুক্তিযুদ্ধ, এখান থেকে গণঅভ্যুত্থান। জার্মান দার্শনিক হেগেল বলেছেন, সংঘাতের মাধ্যমেই সভ্যতার বিকাশ ঘটে। যখন ন্যায় ও অন্যায়ের সংঘর্ষ হয়, অন্যায় পরাভূত হয়, এর মাধ্যমেই স্বাধীনতা অর্জিত হয়। এরকমই সংঘর্ষের নাম মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান ও জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ বলেন, পৃথিবীর যত পরিবর্তন, যত ইতিহাস সব কিছুতেই ছাত্ররা জড়িত। জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে ছাত্ররা জেগে উঠে বিজয় এনে দিয়েছে। গুম, খুন সব কিছুই জন্য তারা লড়াই করেছে। রক্তচক্ষুর বাইরে থেকে আপনারাও যুদ্ধে নেমেছিলেন। যারা মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন, আপনারা সজাগ হন। নতুন প্রজন্মকে সামনে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নেবো।
সংবর্ধনা নিতে এসে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত মজুমদার বলেন, একাত্তরের কারণে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। সেই দিনগুলোতে যদি সাধারণ জনগণ, ছাত্র-জনতা ঝাঁপিয়ে না পড়তেন তাহলে আমাদের জন্য স্বাধীনতা অর্জন কঠিন হয়ে যেত। স্বাধীনতা পাওয়ার ৫৩ বছরে অনেক কিছু অর্জন করেছি। আবার অনেক কিছু করতে পারিনি। তবে যা অর্জিত হয়েছে, তা ধরে রাখতে হবে। তা না হলে যারা মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছে তারা শান্তি পাবে না। এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে নেওয়ার যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি। দেশটা কলুষিত করে ফেললে আমরাই খারাপ থাকবো। আমাদের অতিলোভ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা লুতফা হাসিন রোজী বলেন, শুধু কয়েকজন যুদ্ধ করেই স্বাধীনতা পায়নি। সাড়ে সাত কোটি মানুষ যোদ্ধা ছিলেন। দেশ স্বাধীন হয়েছে, তবে মুক্তিযুদ্ধের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। গত ৫৩ বছর ধরে কোনও না কোনোভাবে আমরা স্বৈরাচারের শিকার হয়েছি। মুক্তিযোদ্ধা কখনোই শেষ হয় না। যেকোনও ফরম্যাটে চলতে থাকে। আমরা শোষণহীন দেশ প্রত্যাশা করছি।
কালের আলো/ডিএইচ/কেএ