বিচারপতি খায়রুল হক জ্ঞানপাপী, মাহমুদ হোসেন বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছেন: অ‍্যাটর্নি জেনারেল

প্রকাশিতঃ 5:05 pm | December 17, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে জ্ঞানপাপী এবং আরেক সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বিচার বিভাগকে ধ্বংসে কাজ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘জ্ঞান পাপী একজন জাস্টিজ ছিলেন খায়রুল হক নাম। উনি মূল রায় থেকে ডিভিয়েন করে (পথভ্রষ্ট) ১৭ মাস পর রায় রিলিজের সময় সেখানে উনি বলেছেন, পরবর্তী দুটি নির্বাচন কোন ফর্মে হবে তা সংসদে ঠিক হবে। ওনাদের থেকে দলছুট হয়ে সিনহা বাবু বলছেন— (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা) আগামী দুটি নির্বাচনই হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। খাইরুল হকের সঙ্গে তাল মেলালেন… ওই যে আরেকটার নাম কী…. জুডিসিয়ারিকে যে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেস। এই যে… তখন একজন বলছেন, মানিক সাহেব, এরপর অ্যাটর্নি বলেন— না না, জুডিসিয়ারি মানিক যতটুকু ধ্বংস করেছে, তার চেয়ে জুডিসিয়ারি ধ্বংসের পেছনে দায়ী সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (সাবেক প্রধান বিচারপতি) নামে একজন জাস্টিজ ছিলেন। এদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত।’

রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। কারণ আজকের রায়ের মধ্যে বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাংবিধানিকভাবেই বৈধ সরকার। ১০৬ অনুচ্ছেদের প্রেক্ষাপটে মতামত নিয়ে করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ফুল বেঞ্চ মতামত দিয়েছেন, এটি সাংবিধানিক ওপিনিয়ন। আপিল বিভাগ সাংবিধানিক মতামতে বলেছেন— রাষ্ট্রপতি ওনাদের কাছে বলেছেন, সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলে গেছেন, অন্য কাউকে ডেকে সরকার গঠন করা সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে আইনি কোনও বাধা আছে কিনা। সুপ্রিম কোর্ট গোটা প্রেক্ষাপট বিবেচনা নিয়ে বলছে— এটা বৈধ ও সাংবিধানিক সরকার হবে। এটার সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনও সাংঘর্ষিক প্রভিশন নেই।’

এক প্রশ্নের জবাবে ‘অন্তর্বর্তী সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামকরণ হবে’ মত তুলে ধরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এই সরকারই তত্ত্বাবধায় সরকারে রিনেমড হবে, যেমন আমি বলি— জেলা ও দায়রা জজের নাম শুনেছেন। একই ব্যক্তি যখন সিভিল মামলা করেন, তখন তাকে বলা হয় জেলা জজ। ওই একই ব্যক্তি যখন ক্রিমিনাল মামলা পরিচালনা করেন, তখন তাকে জেলা জজ বলা যায় না, তখন তিনি দায়রা জজ। এই ব্যক্তিরাই যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার সিস্টেমে চলে যাবেন ওনারাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হবেন। এটাতে সাংবিধানিক সাংঘর্ষিকের কোনও জায়গা নেই। ’

আরেক প্রশ্নের জবাবে অ‍্যাটর্নি বলেন, ‘আপিল বিভাগে যে রিভিউ পেন্ডিং আছে— তা বাইপাশ করেই এই রায়ের প্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কেন আছে, তত্ত্বাবধায়কের ত্রয়োদশ সংশোধনীতে দুটি রেশিও, এক তত্ত্বাবধায়ক সরকার বৈধ নাকি অবৈধ। এই পার্টে চারজন বলছেন অবৈধ, তিনজন বললেন বৈধ। দ্বিতীয় পার্টে সবাই বললেন, পরবর্তী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হবে। এই যে পরবর্তী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হবে, তার আগেই পঞ্চদশ সংশোধনী চলে এসেছে, তাহলে ধরে নেওয়া হবে— ওই জাজমেন্ট রেশিও এখনও অপারেটিভ আছে, কার্যকর আছে। তাহলে কমপক্ষে আগামী দুটি নির্বাচন তো আপিল বিভাগের অ্যাটেনশন লাগে না।’

কালের আলো/এমএএইচইউ