মুগ্ধ-সাঈদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করতে পারি না: মশিউর রহমান

প্রকাশিতঃ 5:24 pm | December 25, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো: 

বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সম্পাদক ও বিসিএস ১৯৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেছেন, কোনো কোটা মানি না, মানব না। কোনো সংস্কার মানি না।

যে কোটার জন্য মুগ্ধ, আবু সাঈদরা শহীদ হয়েছেন, সেটা মানি না। আমরা তাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করতে পারি না। অতীতে কোনো কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন হয়েছে বলে আমি দেখিনি। এবারও এই ভুয়া কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন হবে না। সংস্কার কমিশনের কোনো ভুয়া রিপোর্ট মানি না।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইস্কাটনে বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘জনপ্রশাসন সংস্কারকে ভিন্নপথে পরিচালিত করে দেশকে অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা’য় উপসচিব থেকে তদূর্ধ্ব পদে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া বাকি ২৫ ক্যাডারদের ৫০ শতাংশ কোটা ইস্যুতে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

মশিউর রহমান বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কোনো ভুয়া রিপোর্ট আমরা মানি না এবং মানব না। অতীতে কখনো কোনো সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন হয়েছে বলে আমি দেখিনি। এবারও এই ভুয়া কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন হবে না।

তিনি অভিযোগ করেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের যারা রয়েছেন তাদের সবাই বিতর্কিত। এই কমিটিতে কাস্টম ক্যাডারের এক কর্মকর্তা রয়েছে যার বিরুদ্ধে এখনো দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সুতরাং এই কমিশন প্রধানের পদত্যাগ দাবি করছি। একই সঙ্গে এই কমিশনের রিপোর্ট জমা দেওয়ার দরকার নাই।

তিনি বলেন, কোনো কোটা মানি না। প্রত্যেক ক্যাডার সার্ভিস যেমন প্রশাসন ক্যাডার, কৃষি ক্যাডার আলাদা করতে হবে। আজকে যারা এখানে এসেছেন তাদের সাহসের তারিফ করছি। আজকে এখানে যারা এসেছেন তারা সাহস নিয়ে এসেছেন। আপনাদের এই সাহসকে স্বাগত জানাই। আমরা এমন একটা প্রশাসন চাই যেখানে দলীয় লেজুরবৃত্তি থাকবে না।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ইস্কাটনে বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে এই সভা শুরু হয়। বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড এবং বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বাসা) যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ্।

এতে উপস্থিত ছিলেন – বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি এ বি এম আব্দুস সাত্তার ও বাসা মহাসচিব মাহবুবুর রহমান।

সম্মানিত আলোচক হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচি ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর নিয়াজ আহমেদ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. এ. বি. এম. ওবায়দুল ইসলাম, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজে’র প্রেসিডেন্ট শহীদুল ইসলাম, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ এবং দৈনিক যুগান্তর উপ সম্পাদক বি এম জাহাঙ্গীর।

আলোচক হিসেবে আরও ছিলেন, বিসিএস ১৯৭৩ ব্যাচের মাহমুদ হোসেন আলমগীর, ১৯৭৯ ব্যাচের উপদেষ্টা, বিয়াম ফাউন্ডেশন পরিচালনা পর্ষদের উপদেষ্টা এস এম জহরুল ইসলাম, ১৯৮১ ব্যাচ হেলালুজ্জামান, ১৯৮২ ব্যাচের ও বিসিএস (প্রশাসন) কলাপ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড সভাপতি এ. বি. এম. আবদুস সাত্তার, ১৯৮২ ব্যাচের ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সভাপতি বিজন কান্তি সরকার, ১৯৮৩ ব্যাচের ও প্রত্যাশা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. আব্দুল বারী, ১৯৮৪ ব্যাচের ও অফিসার্স ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ এম এ খালেক, ১৯৮৪ ব্যাচের ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া, ১৯৮৪ ব্যাচ শেখ আলাউদ্দিন, ১৯৮৫ ব্যাচের ও বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সম্পাদক মোহাম্মদ মসিউর রহমান, ১৯৮৫ ব্যাচের ও বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড সদস্য মো. তৌহিদুর রহমান, ১৯৮৫ ব্যাচের ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ, ১৯৮৬ ব্যাচের মো. জাকির হোসেন কামাল, ১৯৮৬ ব্যাচের মঞ্জুর মোর্শেদ,১৯৮৬ ব্যাচের শামীম আল মামুন।

উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কোটা রাখার সুপারিশ করবেন তারা। বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়।

কালের আলো/ডিএইচ/কেএ