মামলা থেকে আসামিদের দায়মুক্তির চেষ্টাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রকাশিতঃ 8:15 pm | December 25, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিউমার্কেট এলাকায় নিহত সবুজ ও শাজাহান হত্যা মামলার চার্জশিট থেকে আসামিদের দায়মুক্তি দেওয়ার চেষ্টায় জড়িত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইল সেন্ট মেরি ক্যাথিড্রাল গির্জা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যিনি এই কাজটি করেছেন তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। যদিও তিনি এখন ছুটিতে আছেন। তবে ছুটি বেশিদিন কাটাতে পারবেন না, আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের কাজে আমরা কোনও সময় প্রশ্রয় দেই না। আর এভাবে চার্জশিট জমা দেওয়ার নিয়ম নেই। তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়ম মানেনি। শুধু তাই নয়, এধরনের কাজ যারাই করবে, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
‘জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দুটি হত্যার মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন পুলিশের একজন তদন্ত কর্মকর্তা।’ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এম সংবাদের বরাতে— সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যিনি এই কাজটি করেছেন তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। এই ধরনের কাজে কোনও সময় প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’
ওই দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন পুলিশের একজন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে আদালতে ওঠার আগেই বিষয়টি ধরা পড়ে যায়। আবার তদন্ত করা হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নথিপত্র ও পুলিশ সূত্র বলছে, তদন্ত কর্মকর্তা তার ডিবির পরিচয় গোপন করে থানা–পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি আদালতে জমার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি এ ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নেননি। বিষয়টি জানাজানির পর তিনি অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে চলে গেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় সবুজকে মারধর করে ও শাহজাহানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরের দিন নিউমার্কেট থানায় মামলা হয়। সবুজের চাচাতো ভাই মো. নুরনবী ও শাহজাহানের মা আয়শা বেগম মামলার বাদী হন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৩ আগস্ট আনিসুল ও সালমানকে আটক করে এই দুই হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ১৬ আগস্ট গ্রেফতার করা হয় সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি পাওয়া মেজর জেনারেল জিয়াকে।
কালের আলো/এএমকে