রমেকে রোগীর স্বজন ও সাংবাদিককে মারধর, ৩ আনসার সদস্য বরখাস্ত
প্রকাশিতঃ 11:38 am | December 28, 2024
রংপুর প্রতিনিধি,কালের আলো:
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্বজন ও সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় ৩ আনসার সদস্যকে বরখাস্ত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে অভিযুক্ত ৩ আনসার সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সাময়িক বরখাস্তকৃতরা হলেন- আনসার সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, আকবর আলী ও রাশেদুল ইসলাম।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান।
রোগির স্বজন ও সাংবাদিক সুত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সন্তানের নেবুলাইজার আনার জন্য নার্সের কাছে বারবার যাচ্ছিলেন নগরীর তালতলা এলাকার আব্দুল বাতেন মিয়া। এ নিয়ে সেখানে আনসার সদস্যের সাথে তার কথাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বাতেন মিয়াকে বেধড়ক মারধর করেন আনসার সদস্যরা। ঘটনাটি জানাজানি হলে সেই ওয়ার্ডে সংবাদ সংগ্রহের জন্য যান স্থানীয় পত্রিকা বায়ান্নর আলোর স্টাফ রিপোর্টার ফেরদৌস জয়। এ সময় ওই সাংবাদিক আনসার সদস্যদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে, তারা কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায় এবং উল্টো ওই সাংবাদিকের মোবাইল ফোন এবং পরিচয়পত্র কেড়ে নিয়ে মারধর করে।
মারধরের শিকার সাংবাদিক ফেরদৌস জয় জানান, মারধরের ঘটনা সোর্সের মাধ্যমে জেনে হাসপাতালে যাই। গিয়ে দেখি হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ের একটি কক্ষে মারধরের শিকার ওই রোগীর স্বজনকে আটকে রাখা হয়েছে। আমি ভুক্তভোগির ভিডিও ইন্টারভিউ নিতে গেলে উপস্থিত আনসার সদস্যরা আমাকে মারধর করেন, গালাগালি করেন, আমার মোবাইল ফোন ও পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেন। এ খবর শুনে সাংবাদিক সহকর্মী ও বড়ভাইরা হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং এর প্রতিবাদ করেন। আমাদের প্রতিবাদের সঙ্গে যোগ দেন রোগীর স্বজনরাও।
এদিকে সাংবাদিক মহলে বিষয়টি জানাজানি হলে, অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্ত আনসার সদস্যরা সেখান থেকে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান এবং আনসারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ঘটনাস্থলে যান সাংবাদিক নেতারাও।
ঘটনার সাথে জড়িত আনসার সদস্যদের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, আনসার, সাংবাদিক এবং পুলিশের যৌথ বৈঠকে অভিযুক্ত আনসার সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, আকবর আলী ও রাশেদুল ইসলামকে হাসপাতাল থেকে প্রত্যাহার এবং সাময়িকভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সাথে তদন্ত সাপেক্ষে স্থায়ী বহিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত তিন আনসার সদস্যের কোথাও দায়িত্ব পালন না করারও সিদ্ধান্ত হয় এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে মোবাইল ফোন এবং পরিচয়পত্র ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে আনসারের রংপুর সদর উপজেলা পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৩ আনসার সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান বলেন, ঘটনা জানার পরপরই হাসপাতালে আসি, প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কালের আলো/এএমকে