এক ফোঁটা রক্ত ঝরলে সারাদেশে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধের হুমকি

প্রকাশিতঃ 2:44 pm | December 29, 2024

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:

ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আবারও রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে সমাবেশ করছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরা। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে এ সমাবেশ শুরু হয়। এদিন সমাবেশে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির পক্ষ থেকে সমর্থন জানান দলটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওয়াহাব মিনার।

এসময় সেখানে উপস্থিত হয়ে এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, একদিকে চিকিৎসকরা নিজেদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করছেন, অন্যদিকে পুলিশ প্রশাসন জলকামান আর সাঁজোয়া যান সাজিয়ে রেখেছে। আপনাদের মনে রাখা উচিত, ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দেশছাড়া করেছে, এই ছাত্রজনতাকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। এখানে এক ফোঁটা রক্ত ঝরলে সারাদেশে সেবা বন্ধ করে দেবেন চিকিৎসকরা।

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আজকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোথায়, নাগরিক কমিটি কোথায়? কেন তারা চিকিৎসকদের আন্দোলনে আসছেন না? এই চিকিৎসকরাও তো দিনের পর দিন বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। আপনারা কেন সরকারকে ৫০ হাজার টাকা ভাতা দিতে বাধ্য করছেন না?

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। কিন্তু আজকের দিনে এই চিকিৎসকদের প্রাপ্য ভাতার দাবিতে আন্দোলন করতে হয়, এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কি আছে?

তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের প্রতিটি সেক্টরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা রয়ে গেছে। তারাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভিন্ন আন্দোলন উসকে দিচ্ছে। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় ছাত্র-জনতাকে নিয়ে আমরা আবারও রাজপথে নামতে বাধ্য হবো। আমরা জানি কীভাবে দাবি আদায় করতে হয়।

এসময় এবি পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওয়াহাব মিনার বলেন, ৫০ হাজার টাকা ভাতা এই চিকিৎসকদের দাবি নয়, অধিকার। এই অধিকার আদায়ে আমিও চিকিৎসকদের সঙ্গে রাজপথে আছি। এমনকি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবো।

তিনি বলেন, আগের আমলে আমরা ছিলাম রাজাকার, এখন হয়ে গেছি আওয়ামী লীগ। এগুলো তো আমরা বুঝি। চেয়ার পার্মানেন্ট না, পার্মানেন্ট হচ্ছে নৈতিকতা।

ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিসের (ডিএমজে) সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুন্নবী বলেন, দাবি পূরণে যত বিলম্ব হবে, আমরা ততো ঐক্যবদ্ধ হবো, শক্তি সঞ্চয় করবো। আমাদেরকে চাপ দিয়ে লাভ নেই। তা না করে কীভাবে তাড়াতাড়ি প্রজ্ঞাপন দেবেন, সেটা নিয়ে ভাবেন। আমরা কারো দালাল নই।

একই দাবিতে গত ২২ ডিসেম্বরও তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন। তখন পাঁচ হাজার টাকা ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল সরকার।

এর আগে ভাতা বাড়াতে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন ট্রেইনি চিকিৎসকরা। দাবি না মানলে দেশের প্রায় ১৩ হাজার পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসক একযোগে কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় ২২ ডিসেম্বর ট্রেইনি চিকিৎসকেরা আন্দোলন শুরু করেন। তাদেরই একটি অংশ শাহবাগ অবরোধ করে। পরে সরকার ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার করার ঘোষণা দেয়। ট্রেইনি চিকিৎসকরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

কালের আলো/ডিএইচ/কেএ