শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে যা বলছে ভারত

প্রকাশিতঃ 9:31 pm | January 03, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করতে প্রস্তুত নয় ভারত। এক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান এখন পর্যন্ত আগের মতোই রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানান তিনি।

রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে বাংলাদেশের বার্তা পাওয়ার কথা জানিয়েছিলাম। ওই প্রাপ্তিস্বীকারের বাইরে তেমন কিছু বলার নেই।’

এদিকে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেই দাবি বিধিসম্মতভাবে করেনি। তাছাড়া চুক্তি অনুযায়ী ওই দাবি গ্রাহ্য না হওয়ার আরও অনেক কারণ আছে।

ব্রিফিংয়ে এই প্রতিবেদন নিয়ে কোনোরকম আলোকপাত করেননি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

এর আগে, গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্দি বিনিময় চুক্তি আছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছে ঢাকা। আমরা তাকে যে বিচারব্যবস্থার জন্য ফেরত চেয়েছি, এটা আমরা তাদের (ভারতকে) জানিয়েছি। এ বিষয়ে আমরা ভারতকে নোট ভারবাল পাঠিয়েছি।

একইসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ীই তাকে ফেরানো যাবে।

এরপর, ওই দিনই শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠি ভারত পেয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়ে তিন বলেছিলেন, ‘(হাসিনাকে) প্রত্যর্পণের অনুরোধ সম্পর্কিত একটি কূটনৈতিক পত্র আজ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে আমরা হাতে পেয়েছি। তবে এ মুহূর্তে এই বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।’

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার পতন ঘটে। পরে তিনি জনরোষ থেকে বাঁচতে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন। তার দলের অনেক নেতাও দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছেন।

জুলাই গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুই শতাধিক হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাদের বিচার হবে। ইতোমধ্যে একটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবং আরেক মামলায় তার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল।

কালের আলো/এএমকে