শুরাপন্থীদের ইজতেমা নির্ধারিত সময়েই, সাদপন্থীদের বিচার দাবিতে কর্মসূচি

প্রকাশিতঃ 5:58 pm | January 04, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ইজতেমা নিয়ে তাবলিগের দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্যেই কাকরাইল মসজিদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শুরাপন্থী হিসেবে পরিচিত মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়েরের অনুসারীরা। তারা জানিয়েছেন, তাদের ইজতেমা আগামী ৩১ জানুয়ারি যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ বা সংশয়ের অবকাশ নেই। তবে পরবর্তী পর্বে মাওলানা সাদের অনুসারীদের যে ইজতেমা হওয়ার কথা রয়েছে সে ব্যাপারে এই পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের হাতে তাবলিগের নিরীহ মুসল্লিদের রক্তের দাগ। তাদের ইজতেমা করার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। তবে এই ব্যাপারে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান শুরাপন্থীরা।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে কাকরাইল মারকাজ মসজিদে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা খলিল আহমদ কোরাইশী, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুর হক প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে তাবলিগ জামাতের সাদপন্থীদের গ্রেপ্তার, বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে ১০ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন শুরাপন্থীরা। এসব দাবি মানা না হলে ২৫ জানুয়ারি দেশের সব পর্যায়ের প্রতিনিধিত্বশীল আলেমদের নিয়ে সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে প্রথম পর্বের ইজতেমা ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠানের কাজ চলমান। এটি যথাসময়ে হবে। তবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা সাদপন্থীরা করতে পারবে কি না তা প্রশাসনই ঠিক করবে বলে জানান তিনি। যাদের হাতে তাবলিগের নিরীহ মুসল্লিদের রক্ত তাদের ইজতেমা করার নৈতিক অধিকার নেই বলেও মনে করেন আলোচিত এই হেফাজত নেতা।

মামুনুল হক বলেন, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। হামলা ও হত্যার শাস্তি হওয়া উচিত। তাবলিগের কাজ নিয়ে ভারতের একজন ব্যক্তির বিতর্কিত মন্তব্যে সে দেশে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের এ সমস্যা যেন বাংলাদেশে টেনে আনা না হয়। এখন বাংলাদেশে সবাই মিলেমিশে কাজ করলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে যারা হত্যায় জড়িত, তাদের বিচার হতেই হবে। হত্যাকাণ্ডের বিচার বিচারের জায়গায় আর আলোচনা আলোচনার জায়গায়।

লিখিত বক্তব্যে মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেন, ২০১৮ সালেও টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে হামলা ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার বিচার হলে ২০২৪–এর ডিসেম্বরে হামলা ও হত্যার ঘটনা ঘটত না। এবারও যদি হামলাকারীরা ছাড় পেয়ে যায়, তবে ভবিষ্যতে আবারও এমন ঘটনা ঘটতে পারে।

তাবলিগের সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতসহ বিভিন্ন ইসলামি রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিত থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে তারা হেফাজতের নেতা হিসেবে নয়, আলেম-ওলামা হিসেবে এসেছেন। তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম যদি ইসলাম ধর্মের কাজ হয়ে থাকে, তবে কোরআন ও সুন্নাহর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আলেমরাই দেবেন। তাবলিগের দুই পক্ষের সমস্যা সমাধানে আলেমরা মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছেন। সরকারও চেষ্টা করছে।

কালের আলো/এমডিএইচ