বিভাজন সৃষ্টি হলে গণঅভ্যুত্থান বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে: সাকি
প্রকাশিতঃ 7:26 pm | January 04, 2025
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সন্দেহ বা বিভাজন সৃষ্টি হলে জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণসংহতি আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার যৌথ উদ্যোগে এক গণসংলাপে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। দক্ষিণের আহ্বায়ক আলিফ দেওয়ান ও উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবনের সভাপতিত্বে এই গণসংলাপ আয়োজন করা হয়।
জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাই, অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা-চৈতন্য তাকে ধারণ করার জন্য আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন এবং আগামী পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এই আকাঙ্ক্ষা যাতে বাস্তবায়িত হয় তার জন্য সংগ্রাম অব্যাহত রাখুন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা আহ্বান জানাই, আপনাদের কাজ এই সমস্ত প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, তাকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করা। এমন কোনো ধারণা যাতে তৈরি না হয়, এমন কোনো অবস্থা যাতে তৈরি না হয় যাতে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হলে, বিভাজন সৃষ্টি হলে আমাদের এই গণঅভ্যুত্থান বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।
রাজনৈতিক শক্তিসমূহের মধ্যে ঐক্য ও আস্থা ধরে রাখা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণ, কাউকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া, এই ধরনের একটি ইতিহাস বাংলাদেশে আছে; বাংলাদেশের জনগণ অভ্যুত্থান করে এই সমস্ত ষড়যন্ত্রমূলক রাজনীতির কবর রচনা করেছে। কাজেই এদেশে আর কোনো ষড়যন্ত্রমূলক রাজনীতি বাস্তবায়ন হতে দেওয়া যাবে না। অন্তর্বর্তী সরকারকে সমস্ত শক্তির মধ্যে এই জায়গা নিশ্চিত করতে হবে, এই আস্থা তৈরি করতে হবে যে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে এবং সেটা সকলকে নিয়ে এগিয়ে যাবে, সকলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশে আগামীর রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা হবে। সেই জায়গা আমরা সবাই মিলে তৈরি করতে চাই।
সাকি বলেন, আমরা গণসংহতি আন্দোলন, আমাদের গণতন্ত্র মঞ্চ আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সমস্ত রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে ন্যূনতম ঐক্য তৈরি করতে চাই। যাতে করে এই রাজনৈতিক রূপান্তর জনগণের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ঘটাতে পারে। একই সঙ্গে আমরা জনগণের কাছে আহ্বান জানাই, নতুন করে গণতান্ত্রিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে। নতুন গণতান্ত্রিক শক্তি যদি গড়ে না উঠে এই নতুন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা; একে চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা হয়তো সফল নাও হতে পারি, এই জায়গা থেকে আপনাদের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের সর্বত্র গণতান্ত্রিক শক্তি গড়ে তুলুন।
তিনি আরও বলেন, এখনো বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে আমাদের নাগরিকদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে, আমরা পরিষ্কার জবাবদিহিতা চাই এবং সরকারের দিক থেকে উদ্যোগ চাই যে, এ সমস্ত আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থের ভিত্তিতে সমস্ত চুক্তি, সমস্ত সম্পর্কে যেন নবায়ন করা হয়। এই অভ্যুত্থান এই রায়ও দিয়েছে যে, আগামীর বাংলাদেশ হবে সার্বভৌম মর্যাদার বাংলাদেশ, দুনিয়ার বুকে মাথা উঁচু করে থাকার বাংলাদেশ। যেটা করতে গেলে বাংলাদেশের যাত্রা হবে ন্যায় বিচার দিয়ে। যারা এদেশকে এভাবে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে তাদেরকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে, যারা আমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করেছে তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এই ন্যায় বিচার শেষে বাংলাদেশ যাতে একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় পরিণত হয়, বাংলাদেশে এমন একটা রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয় যাতে বাংলাদেশের সকল মানুষ নিজেকে এই রাজনৈতিক ব্যবস্থার অংশীদার মনে করতে পারে।
কালের আলো/এএএন/কেএ