ভিপি নূরকে কারা দিয়েছিলো ১২ হাজার টাকা, তদন্ত দাবি
প্রকাশিতঃ 11:58 am | March 13, 2019
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপি পদে রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের ‘অস্বাভাবিক’ পরাজয়ের পর হারের ‘ময়না তদন্ত’ শুরু করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। আর এতেই কেঁচো খুড়তে বেরিয়ে আসছে সাপ।
আর এই কাল সাপই হচ্ছেন নিজ দলীয় গুটিকয়েক নেতা। কোটা আন্দোলনে যাদের ভূমিকা ছিলো রহস্যময়। ওই নেতারাই মূলত নুরুল হক নুরকে নিজেদের স্বার্থেই ছাত্র অধিকার আন্দোলনের নেতা হিসেবে তৈরি করেছিলো। এর মধ্যে দু’জন নেতা কোটা আন্দোলনের খরচা হিসেবেই তাকে ১২ হাজার টাকাও দিয়েছিলো।
চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য ফাঁস করে ওই ছাত্রলীগ নেতাদের রীতিমতো আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সভাপতি মাকসুদ রানা মিঠু। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় নিজ ফেসবুক ওয়ালে দেওয়া ওই স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে ঝড় উঠেছে। এই তথ্যের আলোকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখারও দাবি উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
আরো পড়ুন:
হার নয় ‘অপরাজিত’ ছাত্রলীগের শোভন!
এমনিতেই ভিপি পদে রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের ‘অবিশ্বাস্য’ হারের পর সংগঠনটির নেতা-কর্মী এবং তাঁর অনুসারীদের ফেসবুক ওয়াল ভরে উঠেছে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সেই বিখ্যাত উক্তিতে- ‘ছাত্রলীগ থেকে যেমন বীর সেনানীর জন্ম হয়, আবার ছাত্রলীগ থেকে বিশ্বাস ঘাতকেরও জন্ম হয়..! তাঁরা বলছেন, আদতে এই বিশ্বাস ঘাতকেরা সত্যিকারের ছাত্রলীগের কর্মী নয়। এদের বেশিরভাগই অনুপ্রবেশকারী বা সংগঠনের চিহ্নিত কতিপয় সাবেকদের অনুসারী।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সভাপতি মাকসুদ রানা মিঠু স্ট্যাটাসে লিখেছেন- ‘ছাত্রলীগের কর্মী থেকে তোমাকে যারা নিজ স্বার্থে ছাত্র অধিকার আন্দোলনের নেতা বানিয়ে পল্টি দিয়ে শিবির নেতা বানালো তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর মত অবস্থান এবং সাহস তোমার কাছ থেকে প্রত্যাশা করি।’
‘ছাত্রলীগ তার যত কর্মীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শিবির বানিয়েছে আমি বিশ্বাস করি তুমি তাদেরই একজন। ছাত্রশিবির করার মত যোগ্য তোমাকে দেখে যেমন কখনো মনে হয়নি তেমনি ছাত্রশিবিরকে প্রেস রিলিজ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কারও জন্য ভোট চাওয়ার মত নির্বোধও মনে হয় না।’
‘ভয় ও সংকীর্ণতা ভেঙে সত্যটা প্রকাশ কর ব্রাদার। সারা দেশকে জানিয়ে দে তোকে কোটা আন্দোলনের নেতা কারা বানিয়েছিল। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোন দুই প্রভাবশালী নেতা তোকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিল। কোন নেতারা সেদিন সামনে ছাত্রলীগের সম্মেলন যাতে না হয় তার জন্য কোটা আন্দোলনের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিল।’
‘নুরু তোকে আজ বলতে হবে ৭ এপ্রিল ২০১৮ তে কোন দুই বড় নেতা তোকে ১২০০০ হাজার টাকা দিয়া আন্দোলনে খরচ করতে বলেছে। আন্দোলনের নেতৃত্ব যাতে হাসান আল মামুন আর তোর হাতে থাকে কে বলেছে সেটা তুই লাইভে এসে বলবি।’
‘তোকে নিয়ে ছাত্রলীগের কোন নেতারা বিভিন্ন সময় বৈঠকে বসেছে সেটা সবাইকে জানিয়ে দে। কোটা আন্দোলন নির্মূল করার জন্য ছাত্রলীগের যে বৈঠক হয় সেখানে শুধুমাত্র তৎকালীন ৩ জন নেতা কেন উপস্থিত ছিল সেটাও ছাত্র সমাজ জানতে চায়।’
কোটা আন্দোলন, ছাত্রলীগের সম্মেলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের ৬০০ কোটি টাকার কাজ, এগুলোর সর্ম্পকটা কি এটাও সবাইকে জানতে হবে। নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য নুরুকে যারা ব্যবহার করেছে তারা হলো ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিবির।’
তবে এসব বিষয়ে এখনো গণমাধ্যমে ভিপি নুরুল হক নুরু’র কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অনেকেই বলছেন, সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতার স্ট্যাটাসে অনেক তথ্য রয়েছে।
এই স্ট্যাটাসের আলোকেই তদন্ত করে দেখতে পারে দলটির হাইকমান্ড বা বিভিন্ন সংস্থা। এতে করে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসলে উপকৃত হবে দল এবং সংগঠন। চিহ্নিত হবে নিজেদের স্বার্থে ষড়যন্ত্র আঁটা মুখোশধারী নেতারা।
কালের আলো/এমআর/এএ