রাজধানীতে অবৈধ যানের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের সিদ্ধান্ত
প্রকাশিতঃ 10:44 am | January 07, 2025
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ঢাকা শহরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সব অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের চলমান অভিযান জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
ঢাকা শহরের যানজট সহনীয় পর্যায়ে আনা এবং ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের লক্ষ্যে গতবছরের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে সোমবার (৬ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী লে. জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি এবং পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস. এম সালেহউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শের ভিত্তিতে আশু করণীয়ের আলোকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।
সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জানান, মাঠ পর্যায়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে ৪,২০০ জন পুলিশ সদস্য এবং ৬০০ জন ছাত্র প্রতিনিধিকে নিয়োজিত করা হয়েছে।
গত ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ৪৫,৪৫৭টি ব্যাটারিচালিত রিকশা, ৫,৯৭৯ পায়ে চালিত রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এছাড়া সড়কে ট্রাফিক আইন ভঙ্গের কারণে ৪৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৫ টাকা জরিমানা আরোপসহ ১,৩৯,০০১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার আলোকে ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যে পাইলট আকারে ঢাকা শহরের ৪টি ইন্টারসেকশনে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। এই পাইলট প্রকল্পের ফলাফলের আলোকে আগামী চার মাসের মধ্যে আরও ১৮টি ইন্টারসেকশনে দেশীয় প্রযুক্তির ট্র্যাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।
খোদা বখস চৌধুরী বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশার বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ইতোমধ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। নীতিমালা চূড়ান্ত করা হলে প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচলকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
এছাড়া তিনি সড়কে যানবাহন চলাচল উন্নয়নের জন্য সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক চলমান প্রয়োজনীয় রোড মার্কিং, ট্রাফিক সাইন এবং বাস স্টপগুলোতে যথাযথভাবে মার্কিং কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে বলেন।
তিনি সড়কে যানজটের কারণ পর্যবেক্ষণ এবং সমাধানের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নেতৃত্বে কমপক্ষে ৬টি এবং ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে ২টি ট্রাফিক মনিটরিং টিম গঠনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া তিনি বাস স্টপেজে বাস থামার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
জনসাধারণের ভোগান্তি কমানোর উদ্দেশ্যে ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সকল অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের চলমান অভিযান জোরদার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঢাকা শহরের প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয় বৈঠকে।
এছাড়া, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকা শহরে ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালুর জন্য সিটি কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
কালের আলো/এমডিএইচ