মাথা যদি ঠিক থাকে, কেউ মাথা কিনতে পারবে না: সারজিস
প্রকাশিতঃ 11:58 pm | January 12, 2025
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম চা-শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেছেন, ব্রিটিশরা চক্রান্ত করে মদ খাইয়ে চা-শ্রমিকদের মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে গেছে। চা-বাগানের ভাইদের কাছে অনুরোধ, কলিজাটা বড় করে চা-বাগানের মদের পাট্টাগুলো ভেঙে ফেলুন। মাথা যদি ঠিক থাকে, কেউ মাথা কিনতে পারবে না।
রোববার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে চা-শ্রমিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, চাকরি নিশ্চিতসহ সর্বোপরি শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়ন নিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমা চা-বাগান মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশ এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, চা-শ্রমিক বোনদের এই চেহারা ছিল না। রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে তাদের এই অবস্থা হয়েছে। তাদের উন্নয়ন নিয়ে কেউ ভাবে না। তাদের নিয়ে শুধু রাজনীতি করতেই ব্যস্ত ছিল সবাই। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার চোখ শুধু ঢাকা থেকে তার বাপের বাড়ি টুঙ্গীপাড়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। দেশের অন্য কোথাও তার চোখ পড়েনি।
তিনি বলেন, এই যে ১৬ বছর ধরে উন্নয়নের গল্প বলতে বলতে মনে হচ্ছিল, আমরা যেন আর বাংলাদেশে নেই, আমরা মঙ্গল গ্রহে বাস করছি। এই উন্নয়ন কোথায়? এই শ্রমিকেরা যে রেশন পান, সেই রেশন ও মজুরি পর্যাপ্ত নয়। এত কষ্ট করে কাজ করেন তারা, আমার চা-শ্রমিক বোনদের চেহারা এ রকম থাকার কথা নয়।
সারজিস আলম আরও বলেন, আপনারা আপনাদের সন্তানদের ভালো করে পড়াশোনা করান। আপনাদের মতো যেন তারা কষ্ট না করে। যদি চা-বাগানের কোনো শিক্ষার্থী টাকাপয়সার জন্য সমস্যায় পড়ে, আমরা তার খরচ বহন করব। সেটা এক হাজার শিক্ষার্থী হলেও আমরা করব। এই জানুয়ারির মধ্যেই আমরা চা-শ্রমিকদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করব। সেখান থেকে আমরা চা-শ্রমিকদের সব কিছু সমাধানের চেষ্টা করব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। এ লক্ষ্যে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান আমরা তৈরি করব। এই পরিষদে চা শ্রমিকদের প্রতিনিধি থাকবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক প্রীতম দাশ বলেন, ন্যাশনাল টি কোম্পানিকে পুনর্গঠন করে এই বাগানগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
কুরমা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটি ও চা ছাত্র-যুব সংঘের আয়োজনে এ চা শ্রমিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন মনু দলই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরী।
চা শ্রমিক আপন বোনার্জী রুদ্র ও ভিম্পল সিংহ ভোলার যৌথ সঞ্চালনায় আরও ছিলেন, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক শ্যামলী সুলতানা জ্যানি, আসাদুল্লাহ গালিব ও কুরমা চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক ইউসুফ খাঁন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চা শ্রমিক কন্যা সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান খাইরুন আক্তার, স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, কুরমা চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নারদ পাশী, চা শ্রমিক নারী নেত্রী গীতা কানু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাজমিন সুলতানা। পরে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন স্থানে তাদের প্রচারপত্র বিতরণ করেন।
কালের আলো/এসএকে