আইএমইডি’র ৮ শর্তে গতি ফিরবে কক্সবাজার বিমানবন্দর প্রকল্পে
প্রকাশিতঃ 3:46 pm | January 13, 2025
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে আট শর্ত দিয়েছে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। শর্তগুলো বাস্তবায়িত হলে প্রকল্পটির গতি ফিরে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। ‘কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবে এসব শর্ত দেওয়া হয়।
গত ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্পটির বিভাগীয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (ডিপিইসি) সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান। সেখানে এসব শর্তের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
সভায় জানানো হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিমানের সুপরিসর পার্কিং সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ১৭ হাজার ৯৫৫ বর্গমিটার নতুন আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ভবন এবং এয়ারক্রাফ্ট পার্কিং এপ্রোন নির্মাণ করা হবে। এটি হলে দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আইএমইডির শর্তে গুলো হয়েছে- প্রথমত, প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি পর্যালোচনায় বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা অনুযায়ী বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়নাধীন কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে হবে। এ ছড়া প্রকল্পটির ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া চতুর্থবার মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করে প্রকল্পের মেয়াদ শর্তাগুলো প্রতিপালন সাপেক্ষে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে গত ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত, বর্ধিত মেয়াদের মধ্যে সংশোধিত ইমপ্লিমেন্টেশন ম্যাট্রিক্স প্রণয়ন করে প্রকল্পটি যথা সময়ে বাস্তবায়নের জন্য বাস্তবায়নকারী সংস্থা এবং উদ্যোগী মন্ত্রণালয় মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।
তৃতীয়ত, উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংস্থানের আওতায় সম্পাদানযোগ্য নির্মাণ কাজ এবং পণ্য ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুণগতমান বজায় রাখতে হবে। এছাড়া ল্যাব টেস্ট রিপোর্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকায় এবং এ সংক্রান্ত সব নথিপত্র যথাযথভাবে প্রকল্প পরিচালকের দপ্তরে সংরক্ষণ করতে হবে।
চতুর্থত, ক্রয় সংক্রান্ত পরিচালনার ক্ষেত্রে পিপিএ-২০০৬ এবং পিপিআর -২০০৮ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
পঞ্চমত, প্রকল্পের এক অঙ্গের ব্যয় অন্য অঙ্গে স্থানান্তর করা যাবে না এবং সকল অঙ্গের ব্যয় সীমা অঙ্গভিত্তিক সংস্থানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
ষষ্ঠত, প্রকল্প দপ্তর এবং নির্মাণকাজের বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে আরও নিবিড়ভাবে তদারকির মাধ্যমে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্ধারিত মেয়াদে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
সপ্তমত, প্রকল্পের অডিট কার্যক্রম শেষ এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আইএমইডিতে পাঠাতে হবে। অষ্টমত, প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য আইএমইডির ‘ই-পিএমআইএসে আপলোড করতে হবে এবং প্রকল্প সমাপ্তির তিন মাসের মধ্যে প্রকল্প সমাপ্তি প্রতিবেদন (পিসিআর) আইএমইডিতে পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে।
ডিডিইসি সভায় অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) বলেন, প্রকল্পের অধীন কোনো পরামর্শক নেই। প্রকল্পের কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য বেবিচকের নিজস্ব অভিজ্ঞ প্রকৌশলী মাধ্যমে নিয়মিত তদারকি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
উপসচিব (পরিকল্পনা-১) সভার কার্যপত্র উপস্থাপন করে বলেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য সভা ডাকা হয়েছে। এই প্রকল্পটি ৩৬২ কোটি ৬২ লাখ ৮৮ হাজর টাকা ব্যয় ধরা হয়। এটি ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য গত ১১ জুন তৎকালীন মন্ত্রী অনুমোদন দেন।
সভায় জানানো হয়, কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্যাসেঞ্জার হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি এবং বিমানের সুপরিসর পার্কিং সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ১৭ হাজার ৯৫৫ বর্গমিটার নতুন আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ভবন এবং এয়ারক্রাফ্ট পার্কিং এপ্রোন নির্মাণই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
এ প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে মতামত দেওয়ার জন্য আইএমইডিতে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এই জন্য আইএমএইডি প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে এসব শর্ত দিয়ে সুপারিশ দিয়েছে।
কালের আলো/এমডিএইচ