বিলোনিয়া ও রামগড় স্থলবন্দরের বাণিজ্য সম্ভাবনা যাচাই করতে নৌপরিবহন উপদেষ্টার নির্দেশে কমিটি

প্রকাশিতঃ 1:00 am | January 16, 2025

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দর পরিদর্শন করে মাত্র দু’দিন আগে একটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। উপদেষ্টার নির্দেশের পরেই খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাশাপাশি ফেনীর বিলোনিয়া স্থলবন্দরের সম্ভাবনা যাচাই করে মতামত দিতে কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে এই সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। মূলত বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আওতাধীন এই দুটি স্থলবন্দরের ভৌগোলিক অবস্থান, আন্তঃদূরত্ব, যোগাযোগ ব্যবস্থা, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য, রাজস্ব আয়, যাত্রী আগমন ও বহির্গমন এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা যাচাই করতে কমিটি সরেজমিন পরিদর্শন করবে এবং মতামত দিবে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, ১০ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিদুল ইসলাম। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (ট্রাফিক) যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ শামীম আলম। আর সদস্য হিসেবে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, অর্থ বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মতামত এবং সুপারিশসহ স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত রোববার (১২ জানুয়ারি) খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘রামগড় স্থলবন্দর থেকে বাংলাদেশ কতটা লাভবান হবে তা নিরূপণে একটি কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির সিদ্ধান্তে পরবর্তী কার্যক্রম নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার লোড করে রামগড় বন্দরের মাধ্যমে সাব্রুম হয়ে ভারতের সেভেন সিস্টারে পণ্য পরিবহন করার উদ্দেশ্যে বন্দর নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে কিছু আমদানি করবে কি না এবং রামগড় বন্দর ব্যবহার করে যাত্রী পারাপারের বিষয়টি ও কমিটির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ রামগড় স্থলবন্দর কবে চালু হবে এবং এর পরবর্তী কার্যক্রম কি হবে তা কমিটির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে খাগড়াছড়ির রামগড়কে স্থলবন্দর ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে এই স্থলবন্দর ঘিরে ১০ একর জায়গায় বন্দর টার্মিনাল, সড়কপথ, গুদামঘর, চেকপোস্ট, কাস্টম ও বিজিবি’র জন্য জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হয়। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১১২ কিলোমিটার দূরত্বের এই স্থলবন্দর দিয়ে মাত্র তিন ঘণ্টায় ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য পৌঁছাবে ভারতের ত্রিপুরার সাব্রুমে। মূলত এই লক্ষ্যে বন্দরটি নির্মাণ করা হয়। একইভাবে ২০০৯ সালে ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বিলোনিয়াকে স্থলবন্দর ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে বিলোনিয়া স্থলবন্দর নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালে ৩৯ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ একর জমি অধিগ্রহণ করে ওপেন স্ট্যাক ইয়ার্ড, পার্কিং ইয়ার্ড, গুদামঘর, তিনতলা অফিস ভবনসহ যাবতীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়।

কালের আলো/এমএএএমকে