জুন-জুলাইতে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসার আশা গভর্নরের

প্রকাশিতঃ 6:30 pm | January 16, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

আগামী জুন-জুলাইতে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসার আশা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সুদের হার বাজার পর্যালোচনার ভিত্তিতে আরও হ্রাস করা সম্ভব হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের অর্থনীতি বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। এছাড়াও ভ্যাট এবং ট্যাক্স হার বাড়নোর সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত এ অবস্থাকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।

তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হার ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যয় ক্রমাগত বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সুদ হার সহনীয় পর্যায়ে রাখা প্রয়োজন। ফলে সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি কিছুটা হলেও হ্রাস পেতে পারে।

সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের সুবিধা পেতে প্রায় ৩১টি ডকুমেন্ট দিতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কারণে তারা অনেক সময় ঋণ সুবিধা প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হয়। বিষয়টি সহজীকরণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের0 উদ্যোগ নিতে হবে।

দেশের অর্থনীতির বিদ্যমান চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাংক ঋণের শ্রেণিকরণের সময়সীমা ৩ মাস থেকে কমপক্ষে আরও ৩-৬ মাস বাড়ানোর দাবি জানান ঢাকা চেম্বার সভাপতি। তিনি বলেন, এছাড়াও দেশের বাইরে ব্যবসায়িক অফিস স্থাপনের বিদ্যমান কঠোর নীতিমালা কিছুটা হলেও শিথিল করা প্রয়োজন। যার মাধ্যমে আমদানি-রফতানি ও বিনিয়োগ বাড়বে। সেই সঙ্গে বেগবান হবে অর্থনীতি। তাছাড়া দেশের সামগ্রিক আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়বদ্ধতা বাড়াতে হবে।

গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সার্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। শিগগিরই বাজারে ইতিবাচক প্রভাব প্রতিফলিত হবে। আসন্ন রমজান মাসে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিশেষকরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে আমদানিতে কোনো ধরনের মার্জিন ছাড়াই এলসি খুলতে ব্যাংকগুলোকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বাজারে ডলারের তেমন কোনো সংকট নেই ও ডলারের দাম বেশ স্থিতিশীল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের মূল্য নির্ধারণ করবে না, এটা নির্ধারিত হবে ডলারের আমদানি ও চাহিদার ভিত্তিতে।

আগামী জুন-জুলাইতে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সুদের হার বাজার পর্যালোচনার ভিত্তিতে আরও হ্রাস করা সম্ভব হবে। ব্যাংক ঋণের শ্রেণিকরণের সময়সীমা বর্তমানে ৩ মাস থেকে বাড়ানো যায় কিনা, তা বিবেচনা করা হবে।

এছাড়া দেশের বাইরে ব্যবসায়িক অফিস খোলার বিদ্যমান শর্তাবলী আরও শিথীল করার বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হবে বলে জানান আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, বর্তমানে স্থানীয় বাজারে ডলারের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশ ইতিবাচক, রফতানি আয় ঊর্ধ্বমুখী এবং রিজার্ভ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এর সুফল শিগগিরই আমরা ভোগ করতে পারব। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের সকল ক্ষেত্রে কমপ্লায়েন্স অনুসরণের জন্য উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে।

এ সময় ডিসিসিআইর ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এএএন/কেএ