সুদানের সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিতঃ 10:38 am | January 17, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর দেশজুড়ে সংঘাতের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক হত্যার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান এবং ডি ফ্যাক্টো প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে।

মূলত ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে আফ্রিকার এই দেশটি। মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) দেশটির ডি ফ্যাক্টো শাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের অধীনে থাকা সুদানের সেনাবাহিনীর সাথে লড়াই করছে।

অর্থাৎ দীর্ঘ ২১ মাসের এই গৃহযুদ্ধে দুই পক্ষের একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান। এই সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া রক্তক্ষয়ী এই সংঘাত দেশকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।

বিবিসি বলছে, একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে “সুদানকে অস্থিতিশীল করার এবং একটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যকে দুর্বল করার” জন্য জেনারেল বুরহানকে অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় শহর ওয়াদ মাদানিতে বেসামরিক লোকদের হত্যার ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হলো। তবে মার্কিন এই বিবৃতিতে ওই হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ করা হয়নি।

এর আগে গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর সাথে লড়াইরত আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া দাগালোর র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-কে সংঘাতের সময় গণহত্যা করার জন্যও অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার বুরহানের উপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করার সময় ওয়াশিংটন জানায়, জেনারেল বুরহানের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী “বেসামরিক নাগরিকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা করেছে”। এমনকি সংঘাতের মধ্যে এমন সব লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করা হয়েছে যার মধ্যে “স্কুল, বাজার এবং হাসপাতালও” রয়েছে।

প্রসঙ্গত, সুদানের সেনাবাহিনী যুদ্ধাপরাধ করেছে বলে সংঘাতের প্রথম বছরেই জানিয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে ক্ষমতার দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেঁধে যায়। দুই বাহিনীর এ লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।

এছাড়া বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন আরও লাখ লাখ মানুষ।

কালের আলো/এমডিএইচ