ইনসাফ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে: জামায়াত আমির

প্রকাশিতঃ 4:53 pm | January 18, 2025

রাজশাহী প্রতিবেদক, কালের আলো:

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, চাঁদাবাজ, ঘুষবাণিজ্য ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। বাংলাদেশে ইনসাফ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলবে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দানে জামায়াতের বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাজশাহীবাসীর উদ্দেশ্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, রাজশাহীতে ৫ আগস্টের পর কোনো চাঁদাবাজ আছে? দুর্নীতিবাজ আছে? ঘুষবাণিজ্য আছে? যদি থেকে থাকে তবে আপনাদের কাছে অনুরোধ এসব ছেড়ে দিন। আল্লাহর ওয়াস্তে ছেড়ে দেন। এটা আপনাদের কাছে আমাদের বিনীত নিবেদন। আমাদের বিনীত অনুরোধ যদি কেউ না মানেন তাহলে বলতে চাই, আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি। ইনসাফ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধ বা আন্দোলন চলবে। ‘আবু সাঈদ ও মুগ্ধ’ শেষ হয়নি যুদ্ধ।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর পর জাতি ভয়াবহ জুলুমের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এতদিন যারাই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার তাদেরকেই জুলুম-অত্যাচার করেছে। গেল ১৫ বছর সরকার রাজনৈতিক তাণ্ডব চালিয়েছে। ১১ জন দায়িত্বশীল নেতাকে তারা কেড়ে নিয়েছে। কাউকে দেশেও থাকতে দেয়নি। মিথ্যা মামলায় দফায় দফায় জেলে নিয়েছে। অথচ তারা কিছুই করেননি। তাদের অপরাধ তাহলে কী ছিল? কেন তাদের ওপর জুলুম করা হয়েছে তা সবাই জানেন। শুধু তাই নয়, এখনও অনেকে জিন্দা শহীদ হয়ে আছেন। হাত-পা টুকরো টুকরো হয়ে আছে। আমাদের বাকি নেতাকর্মীদের জীবনও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, আ.লীগ সরকার আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করে মানুষকে পশুর মত গুলি করে মেরেছে। যেন কেউ তা জানতে না পারে। সে সময় অনেক লাশও গুম করা হয়েছে। লাশ পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছে। তাই এখনও বহু জায়গায় গেলে সেসব পরিবারের অভিভাবকরা আমাদের কাছে তাদের হারানো সন্তানের সন্ধান চায়।

রাজশাহীর এই কর্মী সম্মেলন জামায়াতে ইসলামীর আমির এসব শহীদের আত্মার শান্তি কামনায় তাদের হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং সকল অনিয়ম-দুর্নীতি ও বৈষম্যের অবসান না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দেন। এছাড়া যেকোনো পরিস্থিতিতে শত মুশকিল ও বাধা মোকাবিলায় দলীয় নেতাকর্মীদের সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠের এই কর্মী সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন- রাজশাহী মহানগর আমির ড. কেরামত আলী।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক। উদ্বোধন করেন- জুলাই বিপ্লবের শহীদ সাকিব আনজুমের পিতা মাইনুল হক। এর আগে মাওলানা আরিফুল ইসলাম অর্থসহ পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন। এর পরপরই সম্মেলন শুরু হয়।

কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মোহামদ সাহাবুদ্দিন।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম. কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, পাবনা জেলা আমির আবু তালেব মন্ডল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমির আবু জার গিফারি, নাটোর জেলা আমির ড. মীর নূরুল ইসলাম. নওগাঁ জেলা আমির খন্দকার আব্দুর রাকীব, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস রাজশাহী মহানগর সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ আবুল বাশার, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ রাজশাহীর আহ্বায়ক  মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী।

স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম, রাজশাহী জেলা জেলার নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল খালেক, ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ, রাজশাহী মহানগর সভাপতি মো. শামীম উদ্দিন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক নওসাজ জামান, রাজশাহী মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাহববুল আহসান বুলবুল, শ্রমিককল্যাণ সভাপতি অধ্যাপক আবদুস সামাদ, রাজশাহী জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নাজমুল হক জেলার শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি অধ্যাপক কামরুজ্জামান, রাজশাহী মহানগরী সাংগঠনিক সেক্রেটারি জসিম উদ্দিন সরকার, শিবিরের রাজশাহী জেলা পূর্ব সভাপতি রুবেল আলী, রাজশাহী জেলা পশ্চিমের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, রাজশাহী বিভাগীয় ওলামা সমিতির সেক্রেটারি মাওলানা রুহুল আমিন, রাজশাহী জেলার মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মাওলানা এফএম ইসমাইল আলম।

কালের আলো/এমডিএইচ