দেশে বায়ুদূষণে মারা যাওয়া ৪৮ শতাংশ ঢাকা-চট্টগ্রাম নগরের : গবেষণা

প্রকাশিতঃ 8:14 pm | January 18, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বাংলাদেশে বায়ুদূষণের কারণে যাদের মৃত্যু হয়, তাদের ৪৮ শতাংশ ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরের মানুষ। বায়ুদূষণ (অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫–এর উপস্থিতি) রোধ করা গেলে বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ২ হাজার ৪৫৬ জনের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব।

বাংলাদেশে বায়ুদূষণে জনস্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব–সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ফিনল্যান্ডভিত্তিক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের (সিআরইএ) এই প্রতিবেদন আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়।

সিআরইএ এবং সেন্টার ফর অ্যাটমোসফেরিক পলিউশন স্টাডিজ (ক্যাপস) যৌথভাবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গবেষণাপত্র তুলে ধরেন গবেষক দলের অন্যতম সদস্য জেমি কেলি।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ বছরের নিচের শিশুরা বায়ুদূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। এই দূষণ রোধ করা গেলে বছরে ৫ হাজার ২৫৪টি শিশুর মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব। এ ছাড়া হৃদ্‌রোগে ২৯ হাজার ৯২০ জন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে ২৩ হাজার ৭৫ জন, সিওপিডিতে (দীর্ঘস্থায়ী অবরোধক ফুসফুসীয় ব্যাধি) ২০ হাজার ৯৭৬ জন, নিউমোনিয়ায় (নিম্ন শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ) ৯ হাজার ৭২০ জন এবং ফুসফুসের ক্যানসারে ৩ হাজার ৬৩ জনের মৃত্যু রোধ করা সম্ভব।

২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে স্যাটেলাইটের তথ্য, আন্তর্জাতিক তথ্যভান্ডার ও সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য–উপাত্ত ব্যবহার করে করা এই গবেষণায় উঠে এসেছে, বায়ুদূষণজনিত অসুস্থতা হাঁপানির কারণে বছরে প্রায় ৬ লাখ ৬৯ হাজার মানুষকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যেতে হয়। এই দূষণের কারণে বছরে ২৬ কোটি ৩০ লাখ কর্মদিবস নষ্ট হয়। বায়ুদূষণের কারণে বছরে ৯ লাখ ৪৮৫টি শিশুর অকাল জন্ম হয়। ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৯টি শিশু ওজনস্বল্পতায় ভোগে। বায়ুদূষণ না থাকলে বছরে মানুষের মৃত্যুহার ১৯ শতাংশ কমবে বলেও গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

শহরাঞ্চলে বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি, গ্রাম ও উপকূলীয় অঞ্চলে বায়ুদূষণ কম বলেও উঠে এসেছে গবেষণায়।

সিআরইএ–এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশ্লেষক ও এই গবেষণার প্রধান গবেষক ড্যানিয়েল নেসান বলেন, বায়ু মানের সামান্য উন্নতিও জাতীয় পর্যায়ে বড় ধরনের স্বাস্থ্যসুবিধা দিতে পারে।

কালের আলো/এএএন/কেএ