জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ‘কড়াকড়ি’, বাড়ছে এফওসি জটিলতা

প্রকাশিতঃ 12:21 pm | January 20, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ফ্রি অব কস্ট-এফওসির আওতায় তৈরি পোশাকের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কড়াকড়ি আরোপে জটিলতা ক্রমশ বাড়ছে। আমদানি করা কাপড় ছাড় করাতে বন্ডের প্রত্যায়ন পত্র যেমন লাগছে, তেমনি কাটিং সিস্টেম চালু করেছে কাস্টমস। অতিরিক্ত ২০ থেকে ৩০ দিন লাগায় বায়ার ইমেজ সংকটসহ ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে এই সুবিধায় আনা কাপড়ের অবৈধ ব্যবসা বন্ধে এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে দাবি কাস্টমসের।

লাখ লাখ ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলে কাঁচামাল আমদানি করতে হয় না বলে, গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের কাছে ফ্রি অব কষ্ট আর্থিক সুবিধাজক ব্যবসায়িক মাধ্যম হয়ে উঠছিল। বিশেষ করে বায়ার প্রতিষ্ঠান নিজেরাই কাপড়সহ প্রয়োজনীয় অ্যাক্সেসরিজ পাঠিয়ে দেবে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস মালিকেরা শুধুমাত্র শ্রমিক ব্যবহার করে উৎপাদিত পণ্য বায়ার প্রতিষ্ঠানের কাছে রফতানি করবে। কিন্তু ডলার সাশ্রয়ী এই এফওসির ক্ষেত্রেও নানা ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ বলেন, ‘এফওসির ক্ষেত্রে আমাদের সুবিধা হলো, ব্যাক টু ব্যাক ডলার খরচ হচ্ছে না। সমস্ত ডলার আসতেছে। তবে এখানে একটা বাধাও আমাদের আছে, সেটা হলো কাস্টমস জটিলতা, বন্ডে জটিলতা আছে।’

এফওসির ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা মেনে পণ্য ছাড় করাতে গিয়ে যেমন অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ হচ্ছে, তেমনি বায়ারদের মধ্যে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের নিয়ে আস্থাহীনতা সৃষ্টি হচ্ছে।

বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যদি ৫০ শতাংশের বেশি এফওসি ফেব্রিক এনে থাকি তাহলে বন্ড থেকে সেটা প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে, বিজিএমইএ থেকে নয়। সেক্ষেত্রে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে।’

এ অবস্থায় এফওসির আওতায় কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে বন্ড কমিশনারেট থেকে প্রত্যয়নপত্র নেয়ার শর্ত শিথিল করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে দাবি জানিয়েছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা।

ক্লিফটন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এফওসির ক্ষেত্রে সরকারি পলিসির মাঝে ত্রুটি আছে। এটাকে যদি নতুনভাবে ডিজাইন করা হয়,তাহলে আমাদের গ্রোথ কিন্তু আরও বাড়বে।’

তবে কাস্টমসের অভিযোগ, ফ্রি অব কষ্টের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে বেশকটি অসাধু গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান আমদানি করা কাপড় যেমন খোলা বাজারে বিক্রি করছে। তেমনি গার্মেন্টসের কাপড়ের আড়ালে ভিন্ন পণ্য এনে ব্যবসা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আর তাই এ ধরনের অপতৎপরতা ঠেকাতে চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি পণ্য ছাড়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে এমন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিষয়ে পত্রের মাধ্যমে বন্ড কমিশনকে জানানো হয় এবং বন্ড সেটা মনিটরিং করে।’

কোনো রকম এলসি খোলার জটিলতা না থাকায় সি অ্যান্ড এফ চার্জ যেমন কম, একইসঙ্গে এফওসির ক্ষেত্রে ইন্স্যুরেন্স ও ব্যাংক গ্যারান্টির প্রয়োজন হয় না।

কালের আলো/এএএন/কেএ