জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে ট্রাম্পের আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত
প্রকাশিতঃ 2:35 pm | January 24, 2025
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইন বাতিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সই করা নির্বাহী আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন দেশটির একটি আদালত। সে অনুযায়ী ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ কার্যকর হওয়া ১৪ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ওয়াশিংটনের সিয়াটলের ফেডারেল বিচারক জন কফেনর এ আদেশ দেন। খবর এএফপি।
মার্কিন বার্তাসংস্থা সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিচারক জন সি. কফেনার এই আদেশের ফলে ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ কার্যকর হওয়া ১৪ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে। তিন দিন আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই নির্বাহী আদেশ জারি করার পর ওয়াশিংটন, অ্যারিজোনা, ইলিনয় ও ওরেগন রাজ্য থেকে মামলা করা হয়।
বিচারক বলেন, এটি একটি স্পষ্টতই অসাংবিধানিক আদেশ। ট্রাম্প প্রশাসনের আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোনো আইনজীবী কীভাবে এ ধরনের আদেশকে সাংবিধানিক বলে নিশ্চিত করতে পারেন, তা আমার বোধগম্য নয়। আমি সত্যিই বিস্মিত হয়েছি।
অন্যদিকে, বিচারকের এই আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন বলে হোয়াইট হাউসের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ট্রাম্প। তার দেওয়া নির্বাহী আদেশের পক্ষে লড়াই করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগও। নির্বাহী আদেশটি সম্পর্কে ট্রাম্প প্রশাসনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ওই আদেশে মার্কিন সংবিধানের ‘সঠিক ব্যাখ্যা’ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসেই একরাশ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। এর মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত ছিল নথিপত্রহীন অভিবাসীদের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারসংক্রান্ত একটি আইন বাতিল। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীতে দেশটির ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া সবার নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছিল।
ওই আদেশ অনুযায়ী, ১৯ ফেব্রুয়ারির পর অবৈধভাবে বা শিক্ষা-পর্যটনসহ সাময়িক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসে সন্তান জন্ম দিলে শিশুকে মার্কিন নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। এমনকি যেসব মা বৈধভাবে কিন্তু সাময়িক উদ্দেশ্যে (যেমন পর্যটন, শিক্ষার্থী বা সাময়িক কর্মী) যুক্তরাষ্ট্রে থাকবেন, তাদের সন্তানরাও নাগরিকত্ব পাবেন না যদি বাবাও অনাগরিক হন। তবে মা-বাবার কেউ মার্কিন নাগরিক হলে সন্তান জন্মের পরই মার্কিন নাগরিক বলে স্বীকৃতি পাবে।
ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশের পর মামলা করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ২২টি অঙ্গরাজ্য, ২টি শহর এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বেশ কয়েকটি সংগঠন। এরপর গতকাল আদেশটি সাময়িক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেন আদালত। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আইনের আশ্রয় নেওয়া অঙ্গরাজ্যগুলো।
এ বিষয়ে অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিস মায়েস বলেন, ‘কোনো প্রেসিডেন্টই নিজের ইচ্ছামতো সংবিধান পরিবর্তন করতে পারেন না। আজকের (আদালতের) সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হলো।’ আর ওয়াশিংটনের অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশটি ‘আমেরিকার সঙ্গে যায় না’।
কালের আলো/এএএন/কেএ