ঢাবি-জাবিতে কেউ শহীদ হয়নি, তবু তারা আন্দোলনের কৃতিত্বের দাবিদার: হাবিব
প্রকাশিতঃ 1:42 pm | January 30, 2025
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র শহীদ না হলেও এই দুই প্রতিষ্ঠিানের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এখন পুরো আন্দোলনের কৃতিত্বের দাবিদার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২৪ গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবাররের উদ্যোগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ২৪ জুলাই শহীদদের ও আহত পরিবারের প্রত্যাশা বাস্তবায়নের দাবিতে নাগরিক সমাবেশে তিনি মন্তব্য করেন।
হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আজ খুব কষ্ট লাগে, আহত নিহত পরিবারের জন্য রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে। এখানে যত আহত নিহত পরিবারের সদস্যরা আছেন তারা কেউই কোনো সাহায্য পাননি। অথচ সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করল সেই টাকা কোথায় গেল? এই আন্দোলন ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, কিন্তু এখন দেখা যায় সব জায়গায় বৈষম্য আছে। এখন দেখা যাচ্ছে আহত পরিবারের সদস্যরাই বৈষম্যের শিকার।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আহত-নিহতদের তালিকা তৈরি করা হয়নি। একই অবস্থা মুক্তিযোদ্ধাদের ও এখনো মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা তৈরি করা হয়নি। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্দোলনের সময় আহত-নিহত হয়েছিলেন। সরকারে তাদের প্রতিনিধি কোথায়? তারা বৈষম্যের শিকার। অথচ আমরা কথা বলতে গেলে আমাদের বলা হয় আওয়ামী লীগের দালাল। তাহলে আমাদের ৪-৫ শত নেতাকর্মী নিহত হলো কেন? গত ১৫ বছর আমাদেরই হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম হয়েছে, জেল-জুলুম-অত্যাচারের শিকার হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অবৈধভাবে সাজা দেওয়া হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পরিবার।
তিনি ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা তো সরকারের পতন চাননি। আপনারা চেয়েছিলেন কোটা সংস্কার। এই দেশের সাধারণ মানুষের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের তো কোটার সাথে কোনো সম্পর্ক ছিল না। তাহলে তারা কেন শহীদ হলো? তাই আওয়ামী লীগের সময় যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়ে সুযোগ সুবিধা নিয়েছে, তাদের কাছ থেকে সেই অর্থগুলো ফিরিয়ে এনে জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থানে আহত নিহত পরিবারদের সাহায্য করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।
ছাত্র উপদেষ্টাদের ইঙ্গিত করে বলেন, আপনারা মন্ত্রিত্ব করেন আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ভালো করেন, আপনারা তো আমাদের ছেলের বয়সী। দল করেন ভালো কথা কিন্তু সরকার থেকে দল করা যাবে না।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান বলেন, আহত নিহতরা যদি জুলাই আগস্টে রক্ত না দিত তাহলে এই ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হতো না এবং বাংলাদেশ থেকে পালাতো না। অথচ আহত নিহতদের নিয়ে আমাদের এখনো রাস্তায় প্রতিবাদ সমাবেশ করতে হয়। এটা খুবই কষ্টের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, এই যে দেশের সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকট মোকাবিলা করতে হলে নির্বাচিত সরকার দরকার। জনগণের সরকার দরকার। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে অনতিবিলম্বে নির্বাচনের পথে হাঁটতে হবে। সংস্কারও করতে হবে নির্বাচনে দিতে হবে। সংস্কার যতটুকু বাকি থাকবে নির্বাচিত সরকার এসে তা সংস্কার করবে।
নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আরিফা সুলতানা রুমা, জাতীয় জনতা ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার; জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু হোসেন ঈসা, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
কালের আলো/এসএকে