নিজের ‘বেইজ্জতি’ নিয়ে মুখ খুললেন সলিমুল্লাহ খান

প্রকাশিতঃ 5:03 pm | February 03, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বাংলা একাডেমি এ বছর যে কয়জন গুণী ব্যক্তিকে পুরস্কারে ভূষিত করেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন বরেণ্য লেখক ও বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খানও। তবে সলিমুল্লাহ খানসহ পুরস্কৃতদের পেছনে দাঁড় করিয়ে রেখে ফটোসেশন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা হচ্ছে। সলিমুল্লাহ খান যখন পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তখন তার চেয়ে অনেক জুনিয়র সামনে চেয়ারে বসা ছিলেন। এটাকে অনেকে সলিমুল্লাহ খানের প্রতি অসম্মান হিসেবে দেখছেন। তিনি নিজেও এটাকে ‘ইজ্জতি’ বলে অভিহিত করে এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন।

গত শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। এরপর পুরস্কৃতদের পেছনে দাঁড় করিয়ে সারা হয় পুরস্কারের ফটোসেশন পর্ব, যা নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

এর একদিন পর রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশে হাকিম চত্বরে জাতীয় কবিতা উৎসবের সমাপনী দিনে আয়োজিত এক সেমিনারে অংশ নিয়ে সলিমুল্লাহ খান এ প্রসঙ্গে কথা বলেন।

বরেণ্য এই লেখক ও প্রাবন্ধিক বলেন– ‘লোকজন বলছে, আপনি পুরস্কার নিলেন কেন?’ আরে.. পুরস্কার নেওয়ার পরেই তো বেইজ্জতটা করছে। বাংলা একাডেমি যদি সম্মান প্রদর্শন করতে না জানে, তাহলে আমাদের কী করা উচিত?’

সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘বাংলা একাডেমির পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠান নিয়ে অনেকে ট্রল করছে। আমাকে জিজ্ঞেস করছে, ছাত্রদের সামনে বসিয়ে আপনারা পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন কেন? আমি বলেছি, তারা ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে বসেছে। বাংলা একাডেমি যদি মানুষকে সম্মান প্রদর্শন করতে না জানে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করব নাকি?’

বাংলা একাডেমি ও আয়োজকদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এখানেও দাসত্বের অবসান করতে হবে। দাসত্বের অবসান করতে হলে সবাইকে এক করতে হবে।’

সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘সকলেই যদি আমরা সমান না হই, তাহলে আমরা এক হব না। ২৪ এর আন্দোলনের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল বৈষম্যবিরোধী, এটা ‘সাম্য’ কথাটারই একটি অনুবাদ।’

জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে তিনি বলেন, ‘কবিতা হল পুরোনো পরিচিত কথার নব রূপায়ণ ও নব নির্মাণ। আমাদের কবিরা অতীতেও অনেক কবিতা লিখেছেন, এর দীর্ঘ ইতিহাস আছে। তবে সম্প্রতি জুলাই আন্দোলনে আমাদের কবিতা মঞ্চ থেকে দেয়ালে চলে গেছে।’

কবিতা পরিষদের ইতিহাস বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘এরশাদ সাহেব এশীয় কবিতা উৎসব করছিলেন। এর প্রতিরোধে দেশের কবিরা রাস্তায় জাতীয় কবিতা পরিষদ গড়ে তোলে। তখন কবি শামসুর রাহমানসহ অন্যান্য নেতৃস্থানীয় কবিরা ছিলেন। এরশাদ সাহেবের সঙ্গে প্রশংসিত কবি আল মাহমুদ, ফজল শাহাবুদ্দিন, সৈয়দ আলী আহসান ছিলেন। ওই প্রেক্ষিতেই কবিতা পরিষদ গড়ে ওঠে। তারপর কবিতা পরিষদের মাঝখানে একটি অভ্যুত্থান হয়। সেখান থেকে নতুন দল গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে। ২০২৪ সালের আন্দোলনের তাদের ক্ষমতাচ্যুতি ঘটেছে এবং কবিতা পরিষদ পুনরায় গড়ে উঠছে।’

কালের আলো/এএএন/কেএ