ষড়যন্ত্রকারীদের লক্ষ্য বিআরআইসিএমকে ধ্বংস করা: ড. মালা খান

প্রকাশিতঃ 5:10 pm | February 03, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়েছেন ‘বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্ট’ (বিআরআইসিএম) এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মালা খান।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ডিআরইউ সাগর রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আবেদন জানান।

সংবাদ সম্মেলনে ড. মালা খান অভিযোগ করেন যে, মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিআরআইসিএম এর মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করানোর পর এখন প্রতিষ্ঠানের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসারের পদ থেকেও তাকে পদত্যাগের জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দেয়া হচ্ছে। অফিস থেকে বরখাস্তের দাবি তোলা হচ্ছে। সকল ষড়যন্ত্র যখন একে একে ব্যর্থ হয়েছে, তখন নতুন করে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এর বাইরে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করা হচ্ছে। যারা এগুলো করছেন তারা ষড়যন্ত্রকারী এবং বিআরআইসিএমকে ধ্বংস করাই তাদের লক্ষ্য। এমতাবস্থায় নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাসহ সকল মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র বন্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, গত বছরের ১২ আগস্ট মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করার পর ল্যাব ও অফিসের চাবি আন্দোলনরত ষড়যন্ত্রকারী চক্রটির সদস্যরা দখলে নিয়েছে। আমি অফিসে যেতে পারছি না। ষড়যন্ত্রকারীরা নানা সময় আমার ব্যক্তিগত ও অফিসিয়াল ফাইলপত্র ঘাটাঘাটি করেছে। সেখান থেকে কাগজপত্র নিয়েছে। অনেক কনফিডেন্সিয়াল ডকুমেন্ট বাইরে সরবরাহ করেছে। এমন কী তারা ডকুমেন্ট টেম্পারিংও করেছে। এসব বিষয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি এবং থানায় জিডি করেছি। সেসব কাগজ দিয়ে নানান জায়গায় অভিযোগ করছে এবং ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি জানতে চাই- যারা অফিস তালা মেরে আন্দোলন করছেন, তারা কি মাসের বেতন তোলা বন্ধ করেছেন? যারা জনগণের সেবাকে জিম্মি করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায় তারা কোন পর্যায়ের দুর্নীতিবাজ?
বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এত সবের পেছনে মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশ ও জনগণের স্বার্থে তৈরি এই প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস করা। এখানকার ল্যাবে টেস্ট বন্ধ রয়েছে। যেসব টেস্ট বন্ধ রয়েছে সেগুলো পার্শবর্তী দেশে নিয়ে করা হবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। এর পেছনে একটি শক্তিশালী চক্র কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ উন্মুক্ত তদন্তের আহবান জানিয়ে মালা খান বলেন, তদন্তের আগেই আমাকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দেওয়া মোটেও আইনি কাঠামোয় পড়ে না। আমার পিএইচডি ডিগ্রী নিয়ে ২০১৫ সালে প্রথম অভিযোগ ওঠে। এরপর বিষয়টি তদন্ত হয়। হাইকোর্টে মামলা হয়। সেই মামলার চুলচেরা বিশ্লেষণ শেষে রায়ে আমি জয়লাভ করি। পিএইচডি ডিগ্রীর বিষয়টি একটি মিমাংসিত ইস্যু। এরপরেও নতুন করে পুরনো জিনিস বারবার সামনে নিয়ে আসছে চক্রটি। আমি যে বিষয়ে পিএইচডি করেছি সেই বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে একটি ৮ তলা ভবন নির্মিত হয়েছে। সেটি দৃশ্যমান ডিগ্রীর ফসল।

প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে মোট তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। এতে মোট টাকার পরিমাণ ছিল ২০০ কোটি টাকা। কিন্তু বলা হচ্ছে, আমি নাকি হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছি। প্রকল্প চলাকালীন ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সকল অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। সিআইডি তদন্ত করেছে। মন্ত্রণালয় তদন্ত করেছে, কিন্তু কেউ দোষী সাব্যস্ত করতে পারেনি। কারণ দেখা গেছে, আসলে অভিযোগ উঠেছিল মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে।

সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মশিউর রহমানকে অপহরণের অভিযোগের বিষয়ে মালা খান বলেন, মশিউর রহমান ২০২০ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। তার রাজনৈতিক পরিচয় কি- তা ও জানি না। তিনি একজন জুনিয়র কর্মকর্তা। তার সাথে আমার কোনো বিরোধ থাকার প্রশ্নই আসে না। তাকে গত ২৩ জানুয়ারি ফৌজদারি অপরাধে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে লাগা চক্রটি অভিযোগ করছেন যে, মশিউরকে নাকি আমি অপহরণ করেছি। মশিউর ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন, সেটা তার বন্ধুরা ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন।

কালের আলো/এএএন/কেএ