সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ যখন ‘গলফার’
প্রকাশিতঃ 5:18 pm | March 22, 2019
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
সবার দৃষ্টি তখন টি গ্রাউন্ডের দিকে। ছোট্ট একটি বল এবং ক্লাব (স্টিক) হাতে প্রস্তুত স্বয়ং সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর কোর্সে মাথায় ক্যাপ আর টি-শার্ট পড়ে ‘আপাদমস্তক’ একজন ‘গলফার’ হয়ে উঠেছেন।
টি-বক্স থেকে প্রথম শটে ‘টি-অফ’ করলেন। সঙ্গে সঙ্গেই তুমুল করতালি। দুর্দান্ত শর্টে মুগ্ধ সবাই। এভাবেই শুক্রবার (২২ মার্চ) সকালে ছুটির দিনেও খানিক ব্যস্ততায় সময় কাটালেন দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর এই প্রধান।
আরো পড়ুন:
সেনাপ্রধানের কুয়েত সফরে উজ্জ্বল হলো ৭’শ সেনা সদস্য পাঠানোর সম্ভাবনা
বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধনও করলেন দশম টয়োটা কাপ গলফ টুর্নামেন্টের। রাজধানীর আর্মি গলফ ক্লাবে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে।
এমনিতেই খেলাধূলা ভালোবাসেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। একজন দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও স্বনামে খ্যাত তিনি। গলফ কোর্সের নির্মল পরিবেশও তাঁর খুব প্রিয়। আভিজাত্যের এই খেলায় বিশেষ উৎসাহী ও পারদর্শী তিনি। পার, বগি, ডাবল বগি, ট্রিপল বগি, বার্ডি, অ্যালবাট্টস সবকিছুই মুখস্ত তাঁর। একজন সফল গলফার হিসেবেও সুনাম আছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেট-ফুটবলের বাইরে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষদের কাছে গলফ খেলার নাম পৌঁছেছে। দেশের বাইরে শিরোপা জয়ের স্বাদ নিচ্ছেন দেশের পেশাদার গলফাররা। ফলে আভিজাত্যের মোড়ক পেরিয়ে গলফ এখন সবার খেলা হয়ে উঠেছে। ষাটের দশকে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর হাত ধরেই এই দেশে গলফের প্রচলন শুরু হয়।
গলফের বিকাশ এবং বিস্তৃতিতেও আন্তরিক সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। গলফপ্রেমী এই মানুষটি চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি দেশের পর্যটনের রাজধানী হিসেবে পরিচিত কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের সদর দপ্তর রামু সেনানিবাসে কক্সবাজার গলফ এন্ড কান্ট্রি ক্লাবের উদ্বোধন করেন।
ক্রীড়াঙ্গণে বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধানের উজ্জ্বল উপস্থিতি’র কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান আবু বেলাল মো: শফিউল হক। গত বছরের শেষের দিকে দেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের (বিওএ) দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি একজন দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে খ্যাত বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘আজিজ আহমেদের সময়ে বিজিবি অনেকগুলো মেডেল পেয়েছে। খেলাধূলায়ও অনেক উন্নতি লাভ করেছে। তিনি বক্সিং ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের ক্রীড়া সংগঠনের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর বাইরেও তাঁর অগাধ অভিজ্ঞতা রয়েছে।’
এদিকে, শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অ্যামেচার গলফারদের নিয়ে আয়োজিত পাঁচটি ক্যাটাগরিতে টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হবে। বিভাগগুলো হলো-সিনিয়র, জুনিয়র, রেগুলার, লেডিস ও ভ্যাটারান। বিদেশি খেলোয়াড়সহ টুর্নামেন্টে ৭০০ জন খেলোয়াড় অংশ নেবেন।
অনুষ্ঠানে লজিস্টিকস এরিয়া কমান্ডার ও আর্মি গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নাভানা গ্রুপের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহ-নূর জিলানী, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ মো. রফিকুল ইসলাম, সদস্য সচিব লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব:) মো. তোজাম্মেল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার (২৩ মার্চ) রাতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এই টুর্নামেন্ট শেষ হবে। প্রধান অতিথি হিসেবে ওইদিন পুরস্কার বিতরণ করবেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
কালের আলো/এসটি/এএ