আর্থিক চাপে বিদ্যুৎ খাত, গরমে লোডশেডিংয়ের শঙ্কা

প্রকাশিতঃ 3:35 pm | February 04, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিপুল পরিমাণ দায়দেনার কারণে আর্থিক চাপে পড়েছে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) আর বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) কাঁধে এখন ৬৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বকেয়া। এ অবস্থায় দেশীয় বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বকেয়া পড়েছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। পরিশোধ না হলে কেন্দ্র চালানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে বেসরকারি মালিকদের সংগঠন।

দেশে বিদ্যুতের বর্তমান চাহিদা প্রায় ১১ হাজার মেগাওয়াট। শীত কমে গেলে মার্চ থেকে বাড়বে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার। ধারণা করা হচ্ছে এ বছর চাহিদা দাঁড়াবে ১৮ হাজার মেগাওয়াটে। আর তাতেই তৈরি হয়েছে লোড শেডিংয়ের শঙ্কা। এর প্রভাব পড়তে পারে সেচ ব্যবস্থাপনাতেও।

বিআইপিপিএ’র সভাপতি, ডেভিড হাসানাত জানান, গত সরকারের সময়ও প্রায় ৬ মাসের বকেয়া ছিলো। তখন তারা সরব হননি কারণ ডলার আর টাকার যে লস তা তখন হয়নি।

পিডিবির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, তাদের বকেয়া পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হচ্ছে। সামনে কয়লা ও গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো হবে।

বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপ্পা) সভাপতি কে এম রেজাউল হাসনাত বলেন, সরকারে অর্থ সংকট চলছে, সেটা সবাই জানে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের হাত-পা বাধা। অর্থ না পেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব নয়। যা গরমে প্রভাব ফেলবে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন এখন অনেকটাই বেসরকারি খাত নির্ভর। গত বছর বিআইডিএস এর এক গবেষণায় বলা হয়, এসব কেন্দ্রের কারণে বছরে অন্তত ১ বিলিয়ন ডলার বা ১১ হাজার কোটি টাকা বেশি খরচ হয়।

পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো ধাপে ধাপে অর্থ নেয়ায় চাপ কিছুটা কমছে। তবে প্রতি সপ্তাহেই নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ টার্গেট রেখে প্রতিষ্ঠানগুলোর বকেয়া পরিশোধ করা হচ্ছে। দুশ্চিন্তা অবশ্যই রয়েছে। তাই ডলারের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।

ক্যাবের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. শামসুল আলম জানান, আগের সরকারের ধারাবাহিকতায় বেসরকারি কোম্পানিকে সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। বেসরকারি খাতও তাদের পাওনা পাওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।

দেশে বিদ্যুতের স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াট। অথচ ১৬ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদা মেটাতে হিমশিম অবস্থা বিদ্যুৎ বিভাগের।

কালের আলো/এসএকে