ক্যানসার হাসপাতালে শয্যা যেন ‘সোনার হরিণ’
প্রকাশিতঃ 5:28 pm | February 04, 2025
কালের আলো রিপোর্ট:
রাজধানীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত সীমিত। মাত্র ৫০০ শয্যার এই বিশেষায়িত হাসপাতালে শয্যা যেন ‘সোনার হরিণ’! প্রয়োজনীয় শয্যার অভাবে দিনের পর দিন হাসপাতালের মেঝে, বারান্দা বা আশপাশের ভাড়া বাসায় কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। রোগীদের অসহায় পরিস্থিতি আর দীর্ঘ অপেক্ষার যন্ত্রণা ক্যানসার চিকিৎসার চেয়েও কঠিন হয়ে উঠেছে।
হাসপাতালে দুই তলায় লিফটের সামনে কথা হয় কিশোরগঞ্জ থেকে আসা রায়হান আহমেদের স্বজনদের সঙ্গে। তারা বলেন, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থেকে এসেছি। দশ দিন যাবত হাসপাতালে, কিন্তু সিট পাইনি। দশ দিনের চেষ্টার পর অবশেষে সিট পেয়েছি। এর মধ্যে ডাক্তার দেখিয়েছি, আর অনেক টেস্ট করিয়েছি।
এই কদিন তারা কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে আব্দুল কাদির নামে রোগীর স্বজন বলেন, আত্মীয়-স্বজনের বাসা, হোটেল কিংবা হাসপাতালের বারান্দায় থেকেছি। এখানে রোগীদের জন্য বাসা পাওয়া যায়। চুক্তিতে বা যে কয়দিন থাকব দিন হিসেবে অনেকেই বাসা ভাড়া দেয়।
হাসপাতালটিতে নতুন ভর্তি হওয়া রোগীদের পাশাপাশি ফলোআপে আসা রোগীদের ভিড়ও লক্ষ্য করা যায়। রোগী ও স্বজনদের জন্য নির্ধারিত বসার চেয়ারে জায়গা না হওয়ায় অনেককেই হাসপাতালের মেঝেতে বসে থাকতে দেখা যায়। তাদের একজন ১৯ বছর বয়সী লাবণী। শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল এই তরুণী কথা বলার অবস্থাতেই নেই। মায়ের কোলে মাথা দিয়ে ফ্লোরে শুয়ে আছেন। পাশেই বাবা ও ভাই দাঁড়িয়ে।
লাবণীর মা কামরুন্নাহার বলেন, আমরা ভর্তি হবো না। আমরা ডাক্তার দেখাতে এসেছি। এর আগে এখানে দেড় মাস ভর্তি ছিলেন। অপারেশনও করাইছি। এক বছরের বেশি সময় অসুস্থ। অপারেশনের পরেও ভালো হয়নি। বলেছিল কয়েক দিন পর আসতে, তাই এসেছি। এখানে বেশির ভাগ পুরাতন রোগী। এমনকি বছর পাঁচেকের পুরাতন রোগীও আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শাহানা পারভীন বলেন, ‘ক্যানসার হাসপাতালে প্রতিদিন ন্যূনতম ১৫০০ রোগী আসে। বিপরীতে কাগজে-কলমে হাসপাতালে বেডের সংখ্যা ৫০০। কিন্তু ওয়ার্কিং বেড এত নয়। এ অবস্থায় আমরা কতজনকে ভর্তি করতে পারবো? বাকি রোগীরা কোথায় যাবে? আর একটা বেডে আজকে ভর্তি করলে রোগী তো আগামীকাল চলে যাবে না। ক্যানসারের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী। সুতরাং প্রতিদিন এতসংখ্যক রোগী ভর্তি করা সম্ভব হয় না।’
কালের আলো/এএএন/কেএ