রেকর্ডভাঙা দাম : ২০২৫ সালে স্বর্ণের চাহিদা কমবে ভারতে?

প্রকাশিতঃ 4:19 pm | February 05, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

বৈশ্বিক স্বর্ণের বাজারের অন্যতম বৃহৎ ক্রেতা দেশ ভারতে চলতি ২০২৫ সালে স্বর্ণের চাহিদা বিগত বছর গুলোর তুলনা কম থাকবে বলে ধারণা করছে এ বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি)। সংস্থার ভারতীয় অপারেশন্স বিভাগের শীর্ষ নির্বাহী শচীন জৈন রয়টার্সকে জানিয়েছেন এ তথ্য।

শচীন জানান, ২০২৫ সালের গোটা বছরে ভারতে স্বর্ণের চাহিদা ৭০০ থেকে ৮০০ টনের মধ্যে ওঠানামা করবে বলে ধারণা করছে ডব্লিউজিসি। গত বছর এই চাহিদা ছিল ৮০২ দশমিক ৮ টন।

অবশ্য কেবল গত বছরই নয়, ভারতে স্বর্ণের চাহিদার উর্ধ্বগতি শুরু হয়েছিল ২০১৫ সাল থেকেই। বস্তুত, ২০১৫ থেকে ২০২৪— এ ৯ বছরের প্রতিটিতেই ভারতে স্বর্ণের চাহিদা ছিল ৮০০ টনের ওপর।

২০২৫ সালের চিত্র অবশ্য ভিন্ন। কারণ গত ২৪ জানুয়ারি থেকে ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতি ১০ গ্রাম স্বর্ণের দাম পৌঁছায় ৮৩ হাজার ১০০ রুপিতে। বর্তমানে দেশটিতে প্রতি ১০ গ্রাম স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ৮৪ হাজার ৩৯৯ রুপিতে।

বস্তুত ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর গত ৭৮ বছরে ভারতে কখনও স্বর্ণের দাম ৮৩ হাজার পর্যন্ত পৌঁছায়নি। চলতি বছর জানুয়ারির প্রথম তিন সপ্তাহ পর্যন্তও দেশটিতে প্রতি ১০ গ্রাম স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ৮২ হাজার ৭০০ রুপিতে। ২৪ জানুয়ারির আগ পর্যন্ত এটিই ছিল স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।

শচীন জৈন জানান, বিশ্বের অন্যান্য দেশের স্বর্ণের অভ্যন্তরীণ বাজারের তুলনায় ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজার পরিস্থিতি খানিকটা ভিন্ন। কারণ অন্য অনেক দেশে স্বর্ণকে নিরাপদ বিনিয়োগমাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাই কোটিপতি বিনিয়োগকারীরাই সেসব দেশে স্বর্ণের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।

অন্যদিকে ভারতে ঐতিহাসিকভাবেই স্বর্ণ আভিজাত্য, সৌন্দর্যের প্রতীক। পরিবার গঠন ও আত্মীয়তার ক্ষেত্রেও স্বর্ণ গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত, দেশটির উচ্চবিত্ত-মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত সমাজে স্বর্ণের অলঙ্কারের উপস্থিতি ব্যতীত বিয়ে অসম্ভব। ভারত প্রতি বছর যে পরিমাণ স্বর্ণ বিশ্ববাজার থেকে কেনে, তার ৭০ শতাংশেরও বেশি ব্যবহার হয় অলঙ্কার প্রস্তুত শিল্পে। তাই দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে গৃহস্থালী লোকজনই স্বর্ণের প্রধান ক্রেতা।

“ভারতের অধিকাংশ পরিবারে স্বর্ণক্রয়ের জন্য পৃথক বাজেট থাকে এবং তা হঠাৎ করে বাড়ানো সম্ভব হয় না। তাই স্বর্ণের দাম যদি বাড়ে, তাহলে সেই বাজেট কাটছাঁট করে লোকজন এবং তার প্রভাব পড়ে স্বর্ণের মোট চাহিদার ওপর”, রয়টার্সকে বলেন শচীন জৈন।

সূত্র : রয়টার্স

কালের আলো/এসএকে