স্কলারশিপ বিজ্ঞাপন: আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন ফাঁদ!

প্রকাশিতঃ 9:00 pm | March 23, 2019

টেক ইনচার্জ, কালের আলো:

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন, আইটি কোর্সে ১০০% স্কলারশিপ! কোর্সে জয়েন করার পর তাদের অফিসে গিয়ে একটি পরীক্ষা দিতে হবে এবং পরীক্ষায় ভাল করলেই স্কলারশিপ।

যথারীতি একটি গুগল ডক ফর্ম দেওয়া নাম, মোবাইল নাম্বার, ই-মেইল, কোর্স নেইম পূরণ করতেই প্রতিবেদককে দুদিন পর ক্ষুদে বার্তা পাঠায় আইটি প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে উল্লেখ করা ছিল তারিখ এবং পরীক্ষার সময়সূচী ।

পরীক্ষা দিতে গিয়ে লক্ষ্য করা গেলো কোন প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা ছিল বিশ মিনিটের, আবার কোনটাতে ২৫ মিনিটের। প্রথম দিন পরীক্ষার পূর্ণমান ছিল ২০, সময় ২০ মিনিট। পরীক্ষা দেওয়ার পর শুরু হল তাদের কোর্স সম্পর্কে, আগ্রহীদের ধারনা দেওয়া। পরীক্ষায় যদি ২০ এর মধ্যে আপনি ১৫ বা ততোধিক পেয়ে যান তবেই স্কলারশিপ পেয়ে যাবেন।

কোন কোর্সে ১৫ শতাংশ ছাড়, আবার কোনটাতে ১০০ ভাগ ছাড়। শতভাগ স্কলারশিপ পাওয়ার পরেও আপনাকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১০০০-১৫০০ টাকা প্রদান করতে হবে, যা উল্লেখ ছিলো না বিজ্ঞাপনে। রেজিস্ট্রেশন ফি’র টাকার সাথে স্কলারশিপের বাকী অংশও পরিশোধ করতে হবে। আপনাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে, আপনি স্কলারশিপ পেয়েছেন কি না! এই বলে আগ্রহীদের বিদায় দেওয়া হচ্ছে।

দুই দিন পর আরেকটি প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষুদে বার্তা পাওয়ার পর, পরীক্ষা দিতে গেলো প্রতিবেদক। এখানকার পরীক্ষা ২৫ মিনিটের, পূর্ণমান ২৫। পরীক্ষা শেষেই তাদের মার্কেটিং শুরু, ২০-১০০ ভাগ ছাড়। তবে স্কলারশিপ পেলে সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য ১২০০-১৫০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। সন্ধ্যা গড়াতেই ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েই, ফোন কল! কথা এইরকম, আপনি স্কলারশিপ পেয়েছেন আগামীকাল এসে সীট কনফার্ম করে যেতে হবে।

প্রথম দিনের প্রতিষ্ঠান ১০০০-১৫০০ টাকা নেওয়ার কথা ছিল রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ। আর দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ১২০০-১৫০০ টাকা চাইল সার্টিফিকেটের কথা বলে। তৎক্ষণাৎ কোনভাবে এড়িয়ে যাওয়ার পরেও আরও তিন দিন যোগাযোগ করলো প্রতিষ্ঠান দুইটি। ঢাকার বাইরে বলায়, জানতে চাইলো কবে আসবেন? আপনি চাইলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও টাকা পাঠাতে পারেন।

প্রতিষ্ঠান দুইটির দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করা হল, তাদের শিক্ষকদের সম্পর্কে। তারা জানালো, বেশিরভাগ শিক্ষকই অধ্যয়নরত, কারো শেষের দিকে, কেউ সবেমাত্র গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছে। আরও জানতে চাওয়া হয়েছিল, আপনারা এতো কম খরচে ব্যয়বহুল কোর্সগুলো কিভাবে পড়াচ্ছেন? সরকারি অনুদান আছে কিনা? প্রশ্নের উত্তরে জানাল এখানে আমাদের কিছু ফ্রি-ল্যান্সিং কোর্স রয়েছে যার মাধ্যমে আমরা ছাত্রদের মাধ্যমে আয় করে নিব।

নামে-বেনামে গড়ে উঠা বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠানের চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা দিয়ে নি:স্ব হচ্ছেন অসংখ্য বেকার যুবক।

কালের আলো/ওএইচ