বঙ্গবন্ধুর জীবন্ত সেই স্মৃতির সামনে অপলক প্রধানমন্ত্রী, আবেগ উদ্দীপ্ত সেনাপ্রধান

প্রকাশিতঃ 11:41 am | March 25, 2019

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

বাঙালি জাতির মুক্তির নিয়ন্তার জীবন্ত এক স্মৃতির সামনে দাঁড়ালেন তাঁরই জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। সামনে ভেসে উঠেছে জাতির পিতার মুখচ্ছবি। সাদা-কালোয় মেলে ধরা স্বাধীনতার মহান স্থপতির শান্ত এই ছবিতে যেন চিত্রিত হয়েছে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলার ভাবনা।

তবে এটি কেবলই একটি ছবি নয়! ছবির ঠিক ডানপাশেই পিতা মুজিবের স্বাক্ষর। বঙ্গবন্ধুর জীবন্ত এই স্মৃতির সামনে দাঁড়িয়ে তখন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন উন্নয়ন আর মুক্তির পথপ্রদর্শক, হ্যাট্টিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মুজিবকন্যার খানিক পাশে দাঁড়িয়েই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে সম্পৃক্ত গৌরবমন্ডিত এই স্মৃতির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিজের জবানীতে তুলে ধরলেন দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

জাগরণ ও শিহরণে আবেগ উদ্দীপ্ত সেনাপ্রধান আপসহীন, চির সংগ্রামী, যুগস্রষ্টা মহামানবের দুর্লভ এই স্মৃতিচিহ্নকে আলোতে এনে ৪৭ বছর আগের ঐতিহাসিক দিনক্ষণটির সারি সারি চিত্রপটও যেন সানন্দে বর্ণনা করে গেলেন। হাস্যোজ্জ্বল মুখায়ব নিয়ে বঙ্গকন্যা শুনছিলেন সেইসব কথা।

এসব ঘটনা প্রবাহ রোববার (২৪ মার্চ) বিকেলের। ঢাকার পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সম্মিলিত সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখানোর সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে সগৌরবের এই দলিল উপস্থাপন করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

ইতিহাসের মহানায়কের চেতনায় স্নাত সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ জানাচ্ছিলেন- ‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়ে মুজিব ব্যাটারি প্রথম আর্টিলারি ইউনিট হিসেবে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মপ্রকাশ করে। বিজয়ের লক্ষ্যে রাখে অসামান্য ও গুরুত্বপুর্ণ অবদান।

স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্যবহৃত মুজিব ব্যাটারী আর্টিলারী এখন ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারী। ১৯৭২ সালে জাতির পিতা সেই ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারী পরিদর্শনে গিয়ে পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। অমূল্য এই স্মৃতিকে চিরজাগরুক রাখতে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী প্রধান আরো জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারীকে ‘মুজিব রেজিমেন্ট আর্টিলারী’ নামকরণেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত। ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে তাঁর সরকার জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি এবং ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করেছে।

সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের লক্ষ্য এগিয়ে নিতে প্রতিরক্ষা নীতি ও ফোর্সেস গোল অর্জনের জন্য বাস্তবায়ন করছে বিভিন্ন কার্যক্রমেরও। মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান ও বীরত্বাগাঁথাসহ সরকারের বিগত ১০ বছরে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের ওপর নির্মিত চারটি আলাদা স্টলও পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।

আয়োজকদের ভাষ্যমতে, সশস্ত্র বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস, দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কার্যক্রমের বিষয়ে জনসাধারণকে ধারণা দিতে সপ্তাহব্যাপী এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।

একই সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, আধুনিক সমরাস্ত্র সম্পর্কে জনসাধারণকে ধারণা দেওয়া, বৃহৎ ও চ্যালেঞ্জিং পেশায় মেধাবী তরুণদের আকৃষ্ট করতেও এই প্রদর্শনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

কালের আলো/পিএস/এএ