যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান হলেন তুলসী গ্যাবার্ড

প্রকাশিতঃ 1:44 pm | February 13, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির সাবেক নেত্রী তুলসী গ্যাবার্ড। দেশটির পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট গতকাল বুধবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সরকারি পদে নিয়োগ দিয়েছে তাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের ভূমিক ব্যাপক ও বিস্তৃত। সিআইএ এবং এফবিআইসহ যুক্তরাষ্ট্রের মোট সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ১৮টি। এই ১৮টি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীর সংস্থা ৭০ হাজারেরও বেশি এবং এ সংস্থাগুলো জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের কাছে জববাদিহিতা করতে বাধ্য। জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান হিসেবে এখন থেকে এই ১৮টি গোয়েন্দা সংস্থা দেখভালের দায়িত্ব পেয়েছেন তুলসী।

তুলসি গ্যাবার্ডকে জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান করা হবে কি না— এ প্রশ্নে ভোট হয়েছিল সিনেটে। এই কক্ষের মোট ১০০ জন সদস্যের ৫২ জন তাকে এ পদে নিয়োগের পক্ষে রায় দিয়েছেন।

তুলসী গ্যাবার্ডের জন্ম ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুদূরবর্তী অঙ্গরাজ্য অ্যামেরিকান সামোয়ার বৃহত্তম শহর তুতুলিয়ায়। তার বাবা মাইক গ্যাবার্ড যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রভাবশালী রাজনীতিক এবং বর্তমানের বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনেট সদস্য হয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে এ পর্যন্ত যতগুলো সিনেট নির্বাচন হয়েছে, প্রতিটিতেই তিনি জয় পেয়েছেন।

হাইস্কুল পাশের পর হাওয়াইয়ের লিওয়ার্ড কমিউনিটি কলেজে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু পড়া শেষ না করেই সেই কলেজ ছেড়ে দিয়ে ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত প্রতিরক্ষা সংস্থা হাওয়াই আর্মি ন্যাশনাল গার্ডে যোগ দেন তিনি। পরের বছর মার্কিন সেনা বাহিনীর মেডিকেল শাখার সদস্য হিসেবে যুদ্ধে অংশ নিতে ইরাকে সফর করেন তিনি। ইরাক থেকে ফেরার পর ২০০৯ সালে হাওয়াই প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক ডিগ্রি নেন তুলসী।

পেশাগত জীবনের প্রায় পুরো সময়ে মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রশান্ত মহাসগারীয় ইউনিটে কর্মরত ছিলেন তুলসী। সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণের চেয়ে সামরিক বাহিনীর মেডিকেল ইউনিট, পুলিশ ও অন্যান্য দাপ্তরিক শাখায় বেশি সময় থেকেছেন তিনি। সামারিক বাহিনীতে তার সর্বশেষ পদবী ছিল লেফটেন্যান্ট কর্নেল।

বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ প্রথমে ডেমোক্রেটিক পার্টিতেই যোগ দিয়েছিলেন তুলসী। ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য হিসেবে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিনিধিত্বও করেছেন তিনি। ২০২২ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে সরে দাঁড়ান তুলসী, তারপর ২০২৪ সালে রিপাবলিকান পার্টির সদস্য হন।

২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন তুলসী। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু কিছুদিন প্রচারাভিযান চালানোর পর নিজে থেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়ে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন তিনি।

নিজের ডেমোক্রেটিক ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসনেরে এ পদ বাগানো তুলসীর জন্য খুবই কঠিন ছিল। রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহার এবং ট্রাম্পকে সমর্থনের ‘পুরস্কার’ হিসেবে এই পদ দেওয়া হয়েছে তুলসীকে।

সূত্র : আরটি/আলজাজিরা

কালের আলো/এসএকে