রাজস্ব আদায়ে বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা চায় এনবিআর

প্রকাশিতঃ 3:05 pm | February 15, 2025

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:

১ দশকের বেশি সময় ধরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এবারও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন প্রায় অনিশ্চিত। এমন বাস্তবতায় এনবিআর আগামী তিন অর্থবছরের জন্য আরও বাস্তবসম্মত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে।

সম্প্রতি অর্থ বিভাগের সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যথাযথ পর্যালোচনা ও গবেষণা ব্যতীত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলে অর্থবছর শেষে তা বরাবরের মতো ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। দেশের উৎপাদন ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং বিগত বছরসমূহের ন্যায় ধারাবাহিক রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থতার দায় থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মনে করে।

চিঠিতে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে অনুষ্ঠিত বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় উপস্থাপিত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২৫-২৬, ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও এর অধীন সব দপ্তরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৫,৬৪,৪১১.৯২ কোটি, ৬,৪৯,০৭৩.৭১ কোটি ও ৭,৪৬,৪৩৪.৭৬ কোটি টাকা।

এতে বলা হয়, প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ বিগত বছরসমূহের রাজস্ব আদায়ের সার্বিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্ধারিত হওয়া সমীচীন। উল্লিখিত রাজস্ব প্রাপ্তির প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ আপাতদৃষ্টে বাস্তবতাবিমুখ এবং যথাযথ গবেষণা উদ্ভূত নয় মর্মে প্রতিয়মান।

লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারায় এনবিআরের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, স্ফিত অঙ্কে বাজেট নির্ধারণ করা এবং বছর শেষে নির্ধারণকৃত বাজেট লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়া-এরূপ চিত্র ধারাবাহিকভাবে চলমান থাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। দেশের সিংহভাগ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জন্য যা মোটেও কাম্য নয়।

এতে আরও বলা হয়, রাজস্ব প্রাপ্তির প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ নির্ধারণে বিগত বছরসমূহের প্রকৃত রাজস্ব আদায়ের উপর সাম্প্রতিক/বিগত বছরসমূহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হলে তা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি বাস্তবসম্মত ব্যয় প্রাক্কলন করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাঠপর্যায়ের অফিসসমূহে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীরা দৃঢ় মনোবল ও উৎসাহের সঙ্গে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে যা তাদের ভবিষ্যতে আরও কর্ম উদ্যমী করবে। এমতাবস্থায়, উপর্যুক্ত বিষয়সমূহ বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মতভাবে নির্ধারণের জন্য
অনুরোধ করা হলো।

এ নিয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, রাজস্ব আহরণ জিডিপির তুলনায় কম। রাজস্ব বৃদ্ধির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এনবিআরের উচিত নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানো। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ করা এবং অপ্রয়োজনীয় কর ছাড় কমানোর ব্যবস্থা করা।

কালের আলো/এএএন/কেএ