সংস্কার না হলে আমরা কোন তিমিরে থাকবো সেটা ভাবুন

প্রকাশিতঃ 9:40 pm | February 17, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

কিছু প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য সরকারকে সময় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশীদ।

তিনি বলেন, সংস্কার না হলে আমরা কোন তিমিরে থাকবো সেটা ভাবুন।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দশম কার্য-অধিবেশন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

শারমীন এস মুরশীদ বলেন, একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গা থেকে আমরা আলোর দিকে ধাবিত হচ্ছি। সেই জায়গায় যদি ধৈর্য ধরে একসঙ্গে মিলে সংস্কারের পথটা তৈরি না করি, তাহলে সবই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। প্রতিটি কাজে ন্যূনতম সময় না দিলে সেটি করা যায় না। সেই সময়টুকু সরকারকে দিতে হবে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আত্মহত্যা, নারীদের মাদকাসক্তি ও বাল্য বিয়ের হার বেড়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এবারের ডিসি সম্মেলনে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উঠে এসেছে সেটি হলো, দেশের কিছু এলাকায় আত্মহত্যার হার বেড়েছে। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের মাদকাসক্তির পরিমাণ বেড়েছে। এমনকি বাল্য বিয়েও বেড়েছে, যাতে করে সাংসারিক সংকট তীব্র হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, সমাজ সেবায় বাৎসরিক যে অর্থমাত্রা নির্ধারণ করা হয়, সে অনুযায়ী আমরা সেবা দিতে পারি না। এর অন্যতম কারণ বাজেট সংকট। ডিসিরা যে-সব দাবি দিয়েছেন, তাতে বোঝা যায় আমাদের ঘাটতি আছে। এই ঘাটতি পূরণে কিছু উদ্যোগ নেওয়ার কথা হয়েছে। আর এসব সমস্যা সমাধানে আরো প্রয়োজন এভিডেন্সমূলক তথ্য। গবেষণার চর্চা না থাকায় গবেষণালব্ধ তথ্য আমাদের কাছে কম রয়েছে। কারণ আত্মহত্যাগুলো যে হচ্ছে, কেন হচ্ছে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট গবেষণা নেই।

উপদেষ্টা আরও বলেন, ১৮ বছরের পর শিশুদের কর্মমুখী করার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যারা এতিম কিন্তু পড়াশোনা করতে চায়, সে সুযোগটা করে দেওয়া। তাদেরকে তো ঝুঁকির মধ্যে ছেড়ে দেওয়া যায় না। তাদের দক্ষ করে তোলাই হবে আমাদের কাজ।

তিনি বলেন, দুটো কাঠামোগত পরিবর্তনের কথা এসেছে। পর্যবেক্ষণ মনিটরিংয়ের কাঠামো পরিবর্তন করা হবে। কারণ মনিটরিংয়ে আমাদের বেশ ঘাটতি আছে। যে কোনো প্রজেক্ট নিবিড় মনিটরিংয়ে না থাকলে তা সফল হয় না। আরেকটা বিষয় হলো গবেষণা ও ডকুমেন্টেশন। এ খাতটাকেও আমরা শক্ত করবো।

তিনি আরও বলেন, আমরা সামাজিকভাবে উপকারভোগীদের যে ভাতাটা দেই, যে সেবাটা দেই এর ৪৬ শতাংশ ত্রুটিপূর্ণ। অর্থাৎ, ১০০ জনের মধ্যে ৪৬ জন ভুল মানুষের কাছে টাকাটা চলে যাচ্ছে। এটা কিন্তু বিশাল অঙ্কের অপচয় এবং যে মানুষটা সুবিধাটা পাওয়ার কথা সে কষ্টে থেকে যায়। আমাদের সংস্কার কমিশনগুলোও তাদের গবেষণা থেকে একই কথা বলেছে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা উপকারভোগীদের যে তালিকা অতীত থেকে পেয়েছি, সেখানে প্রচুর ত্রুটি আছে।

কালের আলো/এসএকে