সাহসিকতা ও সেবা ক্যাটাগরিতে র‍্যাবে ৫৯ জন পুরস্কৃত

প্রকাশিতঃ 7:43 am | March 27, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

‘সাহসিকতা’ ও ‘সেবা’ ক্যাটাগরিতে র‍্যাবের ৫৯ জন সদস্যকে পুরস্কৃত করেছেন র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। ২০১৮ সালের বিভিন্ন আভিযানে সাহসিকতা দেখানোয় তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) র‌্যাব সদর দফতরে সংস্থাটির ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাহসিকতা ও সেবা ক্যাটাগরিতে মহাপরিচালক র‍্যাব ফোর্সেস স্বীকৃতি সম্মাননা দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে র‌্যাব মহাপরিচালক তার বক্তব্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠায় র‌্যাবকে একটি আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জঙ্গি দমন, সংঘবদ্ধ অপরাধী, অস্ত্রধারী ও মাদকের বিরুদ্ধে সফল অভিযান পরিচালনাসহ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করার র‌্যাবর সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানান। এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন।

র‍্যাব সদরদফতর থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালে আভিযানিক ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ৩৪ জন র‍্যাব সদস্যকে বিশেষ সম্মাননা ‘সাহসিকতা’ এবং প্রশাসনিক ও সেবামূলক প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২৫ জন র‍্যাব সদস্যকে বিশেষ সম্মাননা ‘সেবা’ প্রদান করা হয়েছে।

বিশেষ সম্মাননা (সাহসিকতা) পুরস্কার পাওয়া ৩৪ জনের মধ্যে র‌্যাব-১-এর একজন, র‌্যাব-২-এর একজন, র‌্যাব-৩-এর দুইজন, র‌্যাব-৪-এর একজন, র‌্যাব-৫-এর চারজন, র‌্যাব-৬-এর একজন, র‌্যাব-৭-এর চারজন, র‌্যাব-৮-এর তিনজন, র‌্যাব-১০-এর একজন, র‌্যাব-১১-এর দুইজন, র‌্যাব-১২-এর একজন, র‌্যাব-১৩-এর দুইজন, র‌্যাব-১৪-এর একজন, র‌্যাব-১৫-এর একজন, অপারেশনস উইংয়ের একজন, ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের সাতজন এবং লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের একজন সদস্য রয়েছেন।

বিশেষ সম্মাননা (সেবা) পুরস্কার পাওয়া ২৫ জনের মধ্যে র‌্যাব-১-এর একজন, র‌্যাব-৬-এর একজন, র‌্যাব-৯-এর একজন, র‌্যাব-১৩-এর দুজন, র‌্যাব-১৪-এর একজন, অপারেশনস উইংয়ের একজন, ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের তিনজন, প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের নয়জন, লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের দুইজন, এয়ার উইংয়ের একজন, কমিউনিকেশন অ্যান্ড এমআইএস উইংয়ের একজন, আরএনডি সেলের একজন এবং র‌্যাব ফোর্সেস ট্রেনিং স্কুলের একজন রয়েছেন।

জঙ্গি সংক্রান্ত আভিযানিক সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে প্রথম স্থান অধিকার করেছে গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় নিয়ে গঠিত র‌্যাব ব্যাটালিয়ন-১৩। দ্বিতীয় স্থানে র‌্যাব-৫ ও তৃতীয় স্থানে র‌্যাব-১১।

পুরস্কার পাওয়ার পর র‌্যাব-১৩ অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে একসময় জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল রাজশাহী ও রংপুরের বিভিন্ন চরাঞ্চলে। ওখানে বেশ কিছু ঘটনাও ঘটে। জাপানি নাগরিক হোশি কুনিওকে হত্যা করা হয়, তারপর একজন বাউলকে হত্যা করা হয়, ধর্মান্তরিত একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। ওই এলাকার জঙ্গি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বড় একটা অংশকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। উত্তরবঙ্গে জঙ্গির প্রধান সমন্বয়ক, সামরিক কমান্ডারসহ ৩৩ জনকে আমরা গত বছরে গ্রেফতার করেছি।’

তিনি বলেন, ‘এদের কাছ থেকে ছোট-বড় ২৮টা অস্ত্র উদ্ধার করেছি এবং বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক উদ্ধার করেছি। এটা চলমান প্রক্রিয়া। এই গ্রেফতারের কারণে গত বছরে জঙ্গি কার্যক্রম রংপুর বিভাগে হয়নি। ভবিষ্যতেও আমরা সতর্ক থাকবো। জঙ্গিরা সংগঠিত হওয়ার আগেই যেন আমরা তাদের গ্রেফতার করতে পারি। কাজের স্বীকৃতি ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজের অনুপ্রেরণা জোগায়।’

মাদকবিরোধী অভিযানে প্রথম স্থান অর্জন করেছে র‌্যাব-৭, দ্বিতীয় র‌্যাব-৫ ও তৃতীয় স্থানে র‌্যাব-১। অস্ত্র উদ্ধার অভিযানেও প্রথম স্থানে র‌্যাব-৭। দ্বিতীয় স্থানে র‌্যাব-৮ ও তৃতীয় স্থানে র‌্যাব-৫। সার্বিভাবেও প্রথম স্থানে রয়েছে র‌্যাব-৭। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যথাক্রমে রয়েছে র‌্যাব-৫ ও র‌্যাব-১৩।

র‌্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের ব্যাটালিয়ন পুরস্কার পেয়েছে, বিষয়টি আনন্দের। শুরু থেকে আমরা অপরাধ দমনে তৎপর ছিলাম। যে কারণে আমাদের সাফল্য বেশি আসছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে র‍্যাব সদরদফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সাহসিকতা ও সেবা পুরস্কার দিয়েছে র‍্যাব মহাপরিচালক। র‍্যাব সদস্যরা তাদের নিজ নিজ কাজে যে সফলতা দেখিয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।’

কালের আলো/এমএইচএ