আমি দেশ বিক্রি করে দিতে পারি না, বললেন জেলেনস্কি

প্রকাশিতঃ 6:24 pm | February 19, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের বৈঠকের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবারের এই সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সম্পর্কের ফাটল পরিষ্কার হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র নিয়েও কথা বলেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় তাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কাজ করবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার তৈরি করা অপতথ্যের বুদবুদে আটকা পড়েছেন।

এর আগে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাতে সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সময় তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার বিষয়ে বলেন, আমি এটি বলতে ঘৃণা করছি। তারপরও বলি, ইউক্রেনের নেতার প্রতি জনসমর্থনের হার ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই পরিসংখ্যান প্রত্যাখ্যান করেছেন।

তিনি বলেছেন, আমরা চার শতাংশ জনসমর্থন নিয়ে কথা বলছি। এটা অপতথ্য। আমরা বুঝতে পারছি, এই অপতথ্য রাশিয়া থেকে উদ্ভূত হয়েছে। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির এক জরিপে দেখা গেছে, চলতি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত জেলেনস্কির প্রতি আস্থা রয়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশ ইউক্রেনীয়র। যা গত বছরের ডিসেম্বরের ৫২ শতাংশের তুলনায় কিছু বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে পাওয়া ইউক্রেনীয় খনিজ সম্পদ উত্তোলন ও ভাগাভাগি করার বিষয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে লিথিয়াম এবং টাইটানিয়ামসহ ইউক্রেনের ভূগর্ভস্থ বিরল খনিজ পদার্থের মালিকানা দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। কারণ প্রথম খসড়ায় বলা হয়েছিল, ইউক্রেনকে তার ভূগর্ভস্থ খনিজ সম্পদের অন্তত ৫০ শতাংশ মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে হবে। তবে ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়ে জেলেনস্কির চাওয়া নিয়ে কোনও কিছুই সেই প্রস্তাবে ছিল না বলে জানিয়েছেন তিনি।

জেলেনস্কি বলেন, ‘‘আমি ইউক্রেনকে রক্ষা করছি। আমি ইউক্রেনকে বিক্রি করতে পারি না। আমি আমাদের দেশ বিক্রি করতে পারি না।’’

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যয় ৩২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে যুদ্ধের ব্যয়ের এই পরিসংখ্যান নিয়ে কিয়েভ ও যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন তথ্য রয়েছে। তিনি বলেন, যুদ্ধে ব্যয় হওয়া অর্থের অন্তত ১২০ বিলিয়ন ডলার এসেছে ইউক্রেনীয় করদাতাদের কাছ থেকে। এছাড়া বাকি ২০০ বিলিয়ন ডলার এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছ থেকে।

ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি ৬৭ বিলিয়ন ডলারের অর্থও সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা অব্যাহত রাখার বিনিময়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বিরল খনিজ সম্পদ চায়।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।

কালের আলো/এসএকে