‘এটুআই প্রকল্পের ৮৫৫ কোটি টাকা দুর্নীতির খবর সঠিক নয়’
প্রকাশিতঃ 7:46 pm | February 19, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
‘এসপায়ার টু ইনোভেট’ (এটুআই) প্রকল্পের ৮৫৫ কোটি টাকা দুর্নীতির খবরটি সঠিক নয় বলে জানিয়েছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং এটুআই কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সংক্রান্ত সংবাদের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে গতকাল (১৮ ফেব্রুয়ারি) ও আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) ‘এটুআই প্রকল্পের ৮৫৫ কোটি টাকা দুর্নীতি/আত্মসাৎ/লুটপাট/অনিয়ম : দুদকের অভিযান’ শিরোনামে সংবাদ প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে। যা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রামের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব সংবাদে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরাত দিয়ে এটুআই প্রকল্পের ৮৫৫ কোটি টাকার অনিয়মে কিংবা দুর্নীতির যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা সঠিক নয়। সংবাদে প্রচারিত ও প্রকাশিত দুদক কর্মকর্তার বক্তব্যের কোথাও তিনি এটুআই প্রকল্পের ৮৫৫ কোটি টাকার দুর্নীতি/আত্মসাৎ/লুটপাট/অনিয়ম বিষয়টি উল্লেখ করেননি। বরং দুদক কর্মকর্তা এটুআই প্রকল্পে প্রকিউরমেন্ট, নিয়োগ, বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং নানা বিষয়ের অভিযোগের বিষয় উল্লেখ করেন। দুদক কর্মকর্তা তার বক্তব্যে জানান, তাদের প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করছেন যে এধরনের অনিয়ম থাকতে পারে, তবে রেকর্ডপত্র আরো যাচাই-বাছাই করতে হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রামের চলমান প্রকল্পটি জানুয়ারি ২০২০ সালে অনুমোদন হয়। যার মেয়াদকাল ছিল জানুয়ারি ২০২০ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ এবং বাজেট ছিল ৪৮৫ দশমিক ৪৪ কোটি (সরকারি খাত : ৪০৩ দশমিক ৬৪ কোটি এবং উন্নয়ন সহযোগী অনুদান : ৮১ দশমিা ৭৯ কোটি)। পরবর্তী সময়ে এই প্রকল্পটি সংশোধিত হয়ে ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ২ বছর মেয়াদ বৃদ্ধির পাশাপাশি বাজেটও বাড়ানো হয়। যার মোট বাজেট অনুমোদিত হয় ৮৫৫ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা (সরকারি খাত : ৫৫৩ দশমিক ৬৪ কোটি এবং উন্নয়ন সহযোগী অনুদান : ৩০১ দশমিক ৮৩ কোটি)।
এছাড়া, জানুয়ারি ২০২০ থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ সাল সময়ে ৫ বছরে সর্বমোট খরচ হয়েছে ৫৬৮ দশমিক ৫৪ কোটি টাকা (সরকারি খাত : ৪০২ দশমিক ৪৯ কোটি এবং উন্নয়ন সহযোগী অনুদান : ১৬৬ দশমিক ৫ কোটি)।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি অর্থায়নের খরচের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সরকারি অডিট টিম দ্বারা যথারীতি প্রতিবছর অডিট সম্পন্ন করা হয়েছে। পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী অনুদান অংশের খরচের অডিট বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক এবং ইউএনডিপি কর্তৃক নিযুক্ত সিএ ফার্ম দ্বারা পুনরায় অডিট সম্পন্ন করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটির মোট বাজেটের পুরো অংশ ৮৫৫ কোটি টাকা অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রকল্পে দুর্নীতির খোঁজে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসময়, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থের আত্মসাৎ হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হয়।
অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, ‘অভিযানে উঠে এসেছে ১৪ জনের সংশ্লিষ্টতায় প্রকল্পের পদে পদে ঘটেছে অনিয়ম-দুর্নীতি। একই প্রতিষ্ঠানকে বারবার কাজ দেওয়া এবং অপ্রয়োজনীয় কাজসহ নানাভাবে সরকারি অর্থ লুটপাট করা হয়েছে।’
কালের আলো/এমএএইচ