আগস্ট বিপ্লবের পরও দেশে এখনো বৈষম্য দূর হয়নি: হামিদুর রহমান
প্রকাশিতঃ 3:58 pm | February 21, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ ও জাতি নতুন দিশা পেলেও দেশ এখনো বৈষম্যমুক্ত হয়নি। এমন দিশা আমরা ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর পেয়েছিলাম। সেদিন সিপাহী-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে আধিপত্যবাদ মুক্ত করেছিল। কিন্তু সে ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়নি।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনের কাউন্সিল হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ভাষা আন্দোলনের কথা আসলে ১৯৫২-এর ২১ শে ফেব্রুয়ারির কথা উঠলেও এর পেছনে রয়েছে অনেক অজানা ইতিহাস। রাষ্ট্রভাষা বাংলার প্রথম দাবি ওঠে ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯১১ সালে। মূলত, রংপুর শিক্ষা সম্মেলনে নওয়াব আলী চৌধুরী ব্রিটিশ সরকারের কাছে প্রথম এ দাবি উপস্থাপন করেন।
ভাষা আন্দোলনে শহীদ অধ্যাপক গোলাম আযমের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, অধ্যাপক গোলাম আযম ছিলেন ভাষা আন্দোলনের সম্মুখ সারির নেতা। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ডাকসুর নির্বাচিত জিএস হিসেবে লিয়াকত আলী খানের কাছে স্মারকলিপিও পেশ করেছিলেন। তিনি ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে বারবার গ্রেপ্তার, কারাবরণ ও কলেজের চাকরি হারিয়েছিলেন। কিন্তু হীনম্মন্যতার কারণে তাকে মূল্যায়ন করা হয়নি বরং ডাকসুর জিএসদের নামফলক থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ফলক থেকে নাম মুছে ফেলেই দেশ, জাতি ও ভাষা আন্দোলনে তার অবদান মুছে ফেলা যাবে না।
তিনি হীন্যমনতা পরিহার করে সরকারকে অধ্যাপক গোলাম আযমের প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ ও জাতি নতুন দিশা পেলেও দেশ এখনো বৈষম্যমুক্ত হয়নি। তিনি অবিলম্বে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি, দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
হামিদ আযাদ বলেন, আওয়ামী- ফ্যাসিবাদীরা পতনের আগে রাষ্ট্রের সব অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে অর্জিত বিপ্লব ও বিজয় ব্যর্থ হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযম হলেও তাকে অবমূল্যায়ন করে ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়ের সৃষ্টি করা হয়েছে। তাকে ‘২১ শে পদক থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় মজলিশ শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও মাওলানা ইয়াছিন আরাফাত এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন, মোস্তাফিজুর রহমান ও প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।
কালের আলো/এমডিএইচ