আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় উন্নতি করছে বাংলাদেশ, এয়ার পাওয়ারের সর্বোচ্চ ব্যবহারে সচেষ্ট বিমান বাহিনী
প্রকাশিতঃ 11:03 pm | February 23, 2025

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
আধুনিক সমরাস্ত্রের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকলে সে দেশ নিজেকে অনেকটাই সুরক্ষিত বলে মনে করেন সমর বিশেষজ্ঞরা। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে বিশ্বের ক্ষমতাধর সব দেশের কাছেই শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রমশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি করছে বাংলাদেশও। উন্নত ও আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।
বিভিন্ন সময় যুদ্ধ প্রস্তুতি অনুশীলনের মাধ্যমে বিমান বাহিনীর সব যুদ্ধাস্ত্র ও জনবল দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা উন্নয়নে বিশেষ সহায়ক হিসেবে অভেদ্য আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার বার্তা দিয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে এয়ার পাওয়ার অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনও। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আকাশসীমা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত। তাঁরা এয়ার পাওয়ারের যথাযথ ব্যবহারে সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে বলেও জানান তিনি।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘এনসুরিং সিকিউরিটি এন্ড মিটিং ডিফেন্স চ্যালেঞ্জেস ইন দ্য কনটেমপোরারি জিওপলিটিক্যিাল এনভায়রনমেন্ট : দ্য রিলেভেন্স ফর এয়ার স্পেস’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে নিজের বক্তৃতায় প্রত্যয়দীপ্ত এমন উচ্চারণ করেন বিমান বাহিনী প্রধান।
জানা যায়, বর্তমান সময়ে যেকোনও দেশের প্রতিরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে আকাশ প্রতিরক্ষা। দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র দ্রুত শনাক্ত করে তা ধ্বংস করা প্রয়োজন হয়। এজন্য প্রতিটি দেশ উন্নত প্রযুক্তিতে বিভিন্ন প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করে। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে অভেদ্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করছে বাংলাদেশও। এদিনের গোলটেবিল বৈঠকটিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ঠাঁই করে নেয় আকাশ প্রতিরক্ষার যাবতীয় বিষয়াদি। পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা ও সমসাময়িক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিরক্ষা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার নানা কৌশল নিয়েও হয়েছে ফলপ্রসু আলোচনা।
বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন সময়ের গতিধারায় একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও পেশাদার বিমান বাহিনী আজ বাস্তব বলেও মনে করেন। তিনি আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত ও পেশাদার বিমান বাহিনী গঠনের মাধ্যমে জাতীয় দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি গোলটেবিলটিতে মূল্যবান আলোচনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গোলটেবিল আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সাবেক প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিআইআইএসএস-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস।
সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (পরিকল্পনা) এয়ার ভাইস মার্শাল মো. শরীফ উদ্দীন সরকার ‘২১ শতকের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ এবং এয়ার পাওয়ারের ভূমিকা: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’ বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন। এছাড়াও, বিআইআইএসএস এর গবেষণা ফেলো এ এস এম তারেক হাসান শিমুল ‘সমসাময়িক ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে এয়ার পাওয়ারের জন্য নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ‘এয়ার পাওয়ারের জন্য প্রতিরক্ষা চ্যালেঞ্জ মিটিং: আঞ্চলিক প্রসঙ্গ’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ উজ জামান। এই গোলটেবিল আলোচনায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাষ্ট্রদূত, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, একাডেমিয়া, থিংক-ট্যাংক, মিডিয়া, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র ও ব্যবসায়ীরা নিজেদের মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন। এ ধরনের আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।
কালের আলো/এমএএএমকে