একজন সেনাসদস্যের পেশাগত উৎকর্ষতা অর্জনে ফায়ারিং-এ দক্ষতা অত্যন্ত জরুরি : সেনাপ্রধান
প্রকাশিতঃ 10:49 pm | February 24, 2025

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
একজন সেনাসদস্যের পেশাগত উৎকর্ষতা অর্জনে ফায়ারিং-এ দক্ষতা অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি মনে করেন, এটি সেনাসদস্যদের মৌলিক প্রশিক্ষণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রাচীনকাল থেকেই ফায়ারি-এর দক্ষতাকেই একজন সৈনিকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আর তাই সৈনিক জীবনের শুরু থেকেই ফায়ারিং-এ দক্ষতা অর্জন করার জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সাভার সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চলতি বছরের ফায়ারিং প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতি বছর সেনাবাহিনীর এই ফায়ারিং প্রতিযোগিতা সেনাসদস্যদের কাঙ্ক্ষিত মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।
এ সময় নবম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ও সাভারের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মঈন খানসহ বিভিন্ন ফরমেশন ও সেনাসদরের উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সদর দপ্তর ৯ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই ফায়ারিং প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল ফরমেশন, লজিস্টিকস্ এরিয়া, ৫টি স্বতন্ত্র ব্রিগেড এবং প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডসহ সর্বমোট ১৭টি দল অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ফায়ারিং প্রতিযোগিতায় ৩৩ পদাতিক ডিভিশন চ্যাম্পিয়ন ও ৭ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেড রানারআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
আইএসপিআর আরও জানায়, এই প্রতিযোগিতায় ১১ পদাতিক ডিভিশনের সৈনিক মো. রাজু সরদার শ্রেষ্ঠ ফায়ারার, ৬ স্বতন্ত্র এডিএ বিগ্রেড’র সৈনিক (ওসিইউ) মো. জুবায়ের আলী দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ ফায়ারার ও ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের লেফটেন্যান্ট সামিয়া রহমান শ্রেষ্ঠ মহিলা ফায়ারার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। এছাড়াও সেনাবাহিনী প্রধান সিএএস ট্রফি ফায়ারিং প্রতিযোগিতার মাইনর ইউনিটসমূহের মধ্যে এডহক ৪৭ মর্টার রেজিমেন্ট আর্টিলারি চ্যাম্পিয়ন, সদর দপ্তর ১০৫ পদাতিক ব্রিগেড রানারআপ এবং মেজর ইউনিট সমূহের মধ্যে ১ ইস্ট বেংগল রেজিমেন্ট চ্যাম্পিয়ন, ২৯ ইস্ট বেংগল রেজিমেন্ট রানারআপ এবং ব্যক্তিগতভাবে ছয়জন শ্রেষ্ঠ ফায়ারারদেরকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
জানা যায়, সেনাসদস্যদের ফায়ারিং এর মানোন্নয়ন ও আগ্রহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৮৯ সাল থেকে সকল ফিল্ড এবং স্ট্যাটিক ইউনিটসমূহকে অন্তর্ভূক্ত করে সিএএস ট্রফি ফায়ারিং প্রতিযোগিতা চালু হয়েছিল। প্রাথমিক সময়ে, ক্লাসিফিকেশন ফায়ারিং-এর ফলাফলের ভিত্তিতে এই ট্রফি প্রদান করা হতো। পরবর্তীতে ২০১৪ সাল হতে ক্লাসিফিকেশন ফায়ারিং পদ্ধতি অনুসরণ করে পৃথকভাবে সিএএস ট্রফি ফায়ারিং প্রতিযোগিতার সূত্রপাত হয়। ২০২১ সালে প্রশিক্ষণ বছর থেকেই প্রথমবারের মতো সিএএস ট্রফি ফায়ারিং প্রতিযোগিতা দুইটি পর্বে পরিচালিত হয়েছে।
সাভার সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চলতি বছরের ফায়ারিং প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সকল স্তরের অধিনায়ক, অফিসার, জেসিও এবং এনসিও সহ সর্বস্তরের সৈনিকদের জন্য ফায়ারিং অনুশীলন করা এবং ফায়ারিং এ দক্ষতা অর্জন করা একটি অভিষ্ট লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আমি এই লক্ষ্য অর্জনে সকলকে ঐকান্তিক প্রচেষ্টার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। তিনি এই প্রতিযোগিতা সুষ্ঠু এবং সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য নবম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ও সাভারের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মঈন খান এবং প্রতিযোগিতার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান।
কালের আলো/এমএএএমকে