ইউক্রেনে অভিনব যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ম্যাক্রোঁর
প্রকাশিতঃ 7:55 pm | March 03, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কিকে কাছে টেনে নিয়েছে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। ফ্রান্সের প্রসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে নতুন একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন।
ফ্ররাসি দৈনি লে ফিগারোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রস্তাব সম্পর্কে বলেছেন ম্যাক্রোঁ। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার আলোচনার ভিত্তিতে প্রস্তাবিত কোনো শান্তি প্রক্রিয়া বা যুদ্ধবিরতিতে তিনি বিশ্বাস করেন না, বরং মনে করেন যদি এ দুই পক্ষের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেন সায় দেয়— তাহলে ভবিষ্যতে রাশিয়ার কাছে ধারাবাহিকভাবে অপদস্থ হতে হবে ইউক্রেনকে। কারণ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তিনি ইউক্রেনকে অসামরিকীকরণ করতে চান।
ম্যাক্রোঁর প্রস্তাব অনসুারে, আগামী অন্তত ১ মাস রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়েই পরস্পরের বিমান, সাগর এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি স্থাপনায় হামলা বন্ধ রাখবে, তবে এর বাইরে স্থলভাগে যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।
এক মাস এই অবস্থা চলার পর স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাবে ইউক্রেন এবং রাশিয়া, তবে যুদ্ধবিরতির পর ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য সেখানে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
“ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয় যে সামনের সপ্তাহগুলোতে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী ইউক্রেনে ঘাঁটি গাড়তে যাচ্ছে। ইউক্রেনে এখন কোনো ইউরোপীয় সেনা থাকবে না। সামনের বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলতে পারে, আলোচনার মূল লক্ষ্য থাকবে চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি পর্যন্ত যাওয়া। চুক্তি স্বাক্ষরের পরই ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী সেনাবাহিনী পাঠানো হবে,” লা ফিগেরোকে বলেন ম্যাক্রাঁ।
যে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো হবে, সেটির নেতৃত্বে থাকবে ব্রিটেন এবং ফ্রান্স— উল্লেখ করে ম্যাক্রোঁ বলেন, “রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সত্যিই সংঘাত থামাতে চান কি না তা যাচাইয়ের একটি পরীক্ষা এই প্রস্তাবটি। পুতিন যদি সত্যিই যুদ্ধ থামাতে চান, তাহলে আমি মনে করি এ প্রস্তাব তার মেনে নেওয়া উচিত।”
এদিকে রোববার লন্ডনে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার সংক্ষিপ্ত এক বৈঠক করেছেন। জেলেনস্কিও ছিলেন সেই বৈঠকে। বৈঠক শেষ স্টারমার বলেন, শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদানে সেখানে ফ্রান্স-ব্রিটেন যৌথবাহিনী পাঠানোর ব্যাপারে সম্মতি আছেন তার।
এদিকে ম্যক্রোঁর এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়া বলেছেন, “মস্কো ইউক্রেনে একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি চায়, যার শর্তগুলো হবে সম্পূর্ণ আইনানুগ এবং যেগুলো এই যুদ্ধের মূল কারণগুলোর বিলোপ ঘটাবে।”
“তার পরিবর্তে এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, যা এই সংঘাতকে থামানোর পরিবর্তে আরও উসকে দেবে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, জাতিসংঘের ম্যান্ডেট ব্যতীত কোনো বিদেশি সেনাকে যদি ইউক্রেনে দেখা যায়, তাহলে তাকে বৈধ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচনা করবে রুশ সেনারা।”
সূত্র : রয়টার্স, আরটি।
কালের আলো/এসএকে